কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী ডাক্তারকে ধর্ষণ-খুনের তদন্তে সিবিআই তদন্তে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, থানায় মিথ্যা রেকর্ড তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে লোপাট করা হয়েছে তথ্যপ্রমাণ। টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল ও প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ মণ্ডলকে জেরা করে এই তথ্য তাদের হাতে এসেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। এ দিন দুই অভিযুক্তকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলা হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদা আদালত।
সিবিআই আদালতকে জানিয়েছে, টালা থানার সিসিটিভি ফুটেজের ডিভিআর এবং হার্ডডিস্ক ডেটা পাঠানো হয়েছে কলকাতা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে। অভিযুক্তদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। যা দু-এক দিনের মধ্যে করা হবে। দুই অভিযুক্তের মোবাইল ফোনও পাঠানো হয়েছে সিএফএসএলে। আগামী দিনে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ মিলতে পারে। দুই অভিযুক্তের নারকো ও পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানো হবে কি না, এ নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা ছিল বুধবার। কিন্তু সিবিআই জানায়, কলকাতার সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিশেষজ্ঞ অন্য কাজে যাওয়ায় তিনি আসতে পারেননি।
এর আগেও কলকাতা পুলিশের গাফিলতি 'ফাঁস' হয়েছিল সিবিআই তদন্তে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছিল,প্রধান অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের জামাকাপড় এবং জিনিসপত্র গ্রেফতারের দুদিন পর উদ্ধার করা হয়েছে। যে জিনিসগুলি অপরাধে প্রমাণে বড় প্রমাণ। অথচ দেরি করেছিল পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে ১০ অগাস্ট সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার দিন ভোর ৪.০৩ মিনিটে তাকে হাসপাতালের সেমিনার হলে প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছিল সঞ্জয় রায়কে। সিবিআইয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, 'অপরাধে অভিযুক্তের ভূমিকা ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ১৪ অগাস্ট তার জামাকাপড় এবং জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। মানে দুই দিন পর। অথচ সঙ্গে সঙ্গে করা উচিত ছিল।'
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল- তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বলে দাবি করেছিল সিবিআই। সিবিআইয়ের আইনজীবীর বক্তব্য, এই ষড়যন্ত্রের পিছনে রয়েছে সন্দীপ ঘোষ। সকাল ১০টা নাগাদ টালা থানা পুলিশ খবর পেলেও বেলা সাড়ে ১১টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ঘটনার দিন অভিজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে সন্দীপ ঘোষের।