এবার এক প্রৌঢ়াকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ। সাতসকালে ভাইফোঁটা দিতে যাওয়ার পথে এই ঘটে ঘটনা। তবে মর্মান্তিক কিছু ঘটার আগেই প্রৌঢ়ার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যান। দুই যুবক প্রৌঢ়ার উপর অত্যাচারের ফন্দি এঁটেছিল। স্থানীয়েরা তাদের মধ্যে একজনকে ধরে ফেলতে সক্ষম হন। অন্যজন প্রথমে পালাতে পারলেও পরে পুলিশের জালে ধরা পড়ে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে বর্ধমান জেলা আদালতে তোলে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি থানার বেগুট এলাকায়। জানা গিয়েছে, ভাইফোঁটা দিতে যাওয়ার পথে বছর ৫৫-এর ওই প্রৌঢ়া দুই যুবক ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। রবিবার ভোররাতে বাপের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা হল সদানন্দ মালিক ওরফে হাবা, বয়স ২৫ বছর এবং অর্ঘ্য ধাড়া, বয়স ২৪ বছর। দু'জনেই বেগুজ গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত সদানন্দ মালিক ওরফে হাবা সাইকেল সারানোর কাজ করে। অন্যদিকে অর্ঘ্য দিনমজুরের কাজ করে। এর আগে চুরি করে ধরা পড়েছিল সে। কয়েক মাস জেল খেটেছে। প্রতিবেশীদের থেকে জানা গিয়েছে, অর্ঘ্য বিবাহিত হলেও চরিত্র ভালো নয় বলে দুর্নাম রয়েছে। এই নিয়ে দাম্পত্যকলহ লেগেই থাকত। তার জেরেই স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন। গ্রামবাসী জানান, সদানন্দ এবং অর্ঘ্য দু'জনেই নিয়মিত নেশা করত।
বাড়িতে অসুস্থ মেয়ে আছে তাই সকাল সকাল ভাইফোঁটা দিতে বেরোন মহিলা। অভিযুক্তরা সেই সময় রাস্তার ধারে পুকুর পাড়ে বসে নেশা করছিল বলে অভিযোগ। তারা মহিলার পথ আটকায়। তারপর জোর করে পুকুর পাড়ের একটি পরিত্যক্ত ঘরে টেনে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে মহিলার উপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠে। প্রৌঢ়ার চিৎকার শুনে ছুটে যান পুকুরের মালিক। তিনি দেখেন সদানন্দ ওরফে হাবা, ওই মহিলার উপর অত্যাচার চালানোর চেষ্টা করছে। অপর অভিযুক্ত অর্ঘ্য পালিয়ে যায়। এরই আরও কিছু মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে যায়। পুলিশে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে সদানন্দ ওরফে হাবাকে আটক করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে অর্ঘ্য গ্রামে ফিরে বাড়িতে পোশাক পাল্টে অন্যত্র পালানোর চেষ্টা করে। সেই সময় গ্রামবাসীরা তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। নির্যাতিতা দু'জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে মেমারি থানার পুলিশ দু'জনকে গ্রেফতার করে। ধৃত দু'জনকে সোমবার আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে। সোমবারই নির্যাতিতার মেডিক্য়াল টেস্ট করানো হয়। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে।