হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড। নিজের ৪ বছরের পুত্র সন্তানকে খুন এক মহিলার। তিনি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সংস্থার কর্মী। ঘটনা গোয়ার। ছেলের লাশ ব্যাগে করে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ আটক করে তাঁকে। পরে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, অভিযুক্ত সূচনা শেঠের বিয়ে হয়েছিল ২০১০ সালে। ২০১৯ সালে তিনি এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তবে ২০২০ সাল থেকে স্বামীর সঙ্গে আর বনিবনা হচ্ছিল না। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদও হয়ে যায়। আদালত এও নির্দেশ দেয়, প্রতি রবিবার সন্তানকে দেখতে পাবেন তাঁর বাবা।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, আদালতের এই নির্দেশের কারণে চাপে পড়ে যান সূচনা। তিনি চাননি তাঁর প্রাক্তন স্বামী সন্তানের সঙ্গে দেখা করুক। তাই পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযুক্ত মহিলা শনিবার ছেলের সঙ্গে গোয়ার হোটেলে যান। তারপর তাকে খুন করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে যখন ওই মহিলাটি ঘর থেকে চেক আউট করেন তখন। একজন সাফাইকর্মী হোটেল রুমে রক্তের দাগ দেখতে পান। সেদিন সূচনা একা রুম থেকে বেরিয়ে এসে হোটেল কর্মীদের ট্যাক্সি বুক করতে বলেন। কর্মীরা ফ্লাইটে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও সুচনা শেঠ ট্যাক্সিতেই যাবেন বলে জানান। হোটেল কর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁরা অনুরোধ করা সত্ত্বেও সূচনা বারবার ট্যাক্সি বুক করার জন্যই জোর করছিলেন। ঠিক তক কর্মীরা লক্ষ্য করেন, সূচনার সঙ্গে নেই তাঁর ছেলে। এদিকে সূচনা ট্যাক্সিতে বেরিয়ে যাওয়ার পর হাউসকিপিং কর্মীরাও তাঁর ঘরে রক্তের দাগ লক্ষ্য করেন।
পুলিশ কীভাবে গ্রেফতার করে ?
হোটেল থেকে ফোন যায় পুলিশের কাছে। তখন পুলিশ হোটেল থেকে ট্যাক্সিচালককে ফোন করে। ট্যাক্সিচালক স্থানীয় ছিলেন। তাই তাঁর নম্বর খুঁজতে সমস্যা হয়নি পুলিশের। ট্যাক্সিচালক পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই মহিলা ট্যাক্সিতে একাই ছিলেন। এরপর পুলিশ ট্যাক্সি চালককে অবিলম্বে মহিলাকে কাছের থানায় নিয়ে যেতে বলে। পুলিশ জানিয়েছে, ট্যাক্সি চালক মহিলাকে নিকটস্থ থানায় নিয়ে গিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এই থানাটি ছিল কর্ণাটকের চিত্রদুর্গা এলাকায়। পরে গোয়া পুলিশ চিত্রদুর্গে পৌঁছে ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করে।
মাইন্ডফুল AI ল্যাবের লিঙ্কডিন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সূচনা শেঠ ২০২১ সালে এআই এথিক্সের ১০০ জনের তালিকার মধ্যে ছিলেন। তাঁর নিজের লিঙ্কডিন অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যায়, তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বার্কম্যান ক্লেইন সেন্টারের একজন ফেলো ছিলেন। স্টার্ট-আপ এবং শিল্প গবেষণা ল্যাবগুলিতে ডেটা সায়েন্স টিমের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।