সোমবার কার্গিল বিজয় দিবসের ২২ বছর পূর্তি হতে চলেছে। তার আগে 'মন কি বাতে' প্রধানমন্ত্রী তুলে নিয়ে এলেন কার্গিল বিজয় দিবসের প্রসঙ্গ।
১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধে যে সকল বীর সেনানী দেশের জন্য শহিদ হয়েছেন, তাঁদের বলিদানকে এদিন শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশের সামরিক বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কার্গিল যুদ্ধ আমাদের সামরিক বাহিনীর বীরত্ব ও শৃঙ্খলার প্রতীক যা গোটা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। তিনি জানান, ভারত এই দিনটিকে অমৃত দিবস হিসেবে উদযাপন করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,সোমবার কার্গিল বিজয় দিবস। কার্গিল যুদ্ধ হল আমাদের সামরিক বাহিনীর বীরত্ব ও শৃঙ্খলার প্রতীক যা গোটা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। আমি এই উপলক্ষে আপনাদের সামনে কার্গিলের রোমহর্ষক কাহিনী তুলে ধরছি। আসুন, সকলে মিলে কার্গিলের বীর সেনানীদের স্যালুট করি।
সত্যি কার্গিল যুদ্ধ ভারতীয় সেনার ইতিহাসে এক গৌরবজ্জ্বল অধ্যায়। ১৯৯৯ সালে যখন ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের আউটপোস্টগুলি দখল নেওয়ার চেষ্টা করে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান তখনই ওই যুদ্ধ বাধে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ওই যুদ্ধ প্রক্রিয়াকেই নাম দেওয়া হয় 'অপারেশন বিজয়'।
প্রত্যেক বছর ২৬ জুলাই পালন করা হয় কার্গিল বিজয় দিবস, কিন্তু কেন? কারণ, ১৯৯৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সমাপ্তি উপলক্ষ্যে এই দিনে পালন করা হয় কার্গিল বিজয় দিবস। জম্মু ও কাশ্মীরের কার্গিল দ্রাস সেক্টরে হয়েছিল এই যুদ্ধ।
১৯৯৯ সালের গ্রীষ্মে, বিশ্ব সাক্ষী হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর মনের জোরের। দেশের নিরাপত্তা জন্য এক কঠিন ও দীর্ঘ যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছিল সারা পৃথিবী। পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের আটকাতে শুরু করা হয়েছিল অপারেশন বিজয়। যারা প্রতারণা করে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ভারতীয় অঞ্চলে ঢোকে।
পাকিস্তানি জঙ্গিরা পাকিস্তানি সেনার মদতে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। সালটা ১৯৯৯, নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে কার্গিলের ভারতীয় প্রান্তে ঢুকে পড়ে শত্রুপক্ষ। টহল দিতে গিয়ে পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ভারতীয় সেনা। আগে থেকেই সুযোগ বুঝে ছক করে বসেছিল অনুপ্রবেশকারীরা। সংঘর্ষে যা তাঁদের প্রথমে বাড়তি সুবিধা দেয়। তবে পিছিয়ে ছিল না ভারতীয় বাহিনীও। স্থানীয় শেফার্ডদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এরপর অনুপ্রবেশকারীদের আক্রমণের স্থান চিহ্নিত করে ফেলে ভারতীয় সেনারা।
১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে যুদ্ধ চালায় ভারতীয় সেনা। ২৬ জুলাই ৫৯৯ জন সাহসী সেনার মৃত্যু ও ১৫৬৩ জনের আঘাতের বিনিময়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী সমস্ত জায়গা নিজেদের অধীনে নিতে সক্ষম হয় ও পাকিস্তানি সেনাকে পিছু হটতে বাধ্য করে। ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনী প্রায় ৬০ দিন ধরে যুদ্ধ করেছিল।
২২ বছর আগের সেই ঘটনার স্মৃতি নাড়া দিলে আজও গর্বে বুকে হাত ঠেকায় দেশবাসী। শত শহিদের রক্তের বিনিময়ে সেদিন দেশের জমি ফিরিয়ে এনেছিলেন আমাদের জওয়ানরা। ২৬ জুলাই ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা একটি দিন।
ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে কার্গিল যুদ্ধের ২২ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবারও শহিদদের স্মরণে বিশেষ অনুষ্ঠান পালিত হবে প্রতি বছরের মতোই।