পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয় সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় ১১ জন বাংলাদেশিকে ধরা হয়েছে। আজ একথা জানিয়েছে বিএসএফ। ২ জনকে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা সীমান্ত থেকে এবং ৭ জনকে মেঘালয় সীমান্ত থেকে ধরা হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের জন্য রাজ্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। BSF-র এক মুখপাত্র বলেছেন, 'বিএসএফ পারস্পরিক সমস্যা, বিশেষ করে ভারতীয় নাগরিক এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর হিংসা প্রতিরোধের জন্য বিজিবি-র সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে।' এছাড়াও, মুখপাত্র বলেছেন যে বিএসএফ এডিজি (পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড) রবি গান্ধী শনিবার সীমান্তে নিরাপত্তা পর্যালোচনা করার জন্য একটি বৈঠক করেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সমস্যাগুলি খতিয়ে দেখতে ADG-এর অধীনে একটি কমিটি গঠন করেছে।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকে সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে থাকা সব সীমান্তে হাই অ্যালার্টে জারি করা হয়েছে। বাংলার উত্তর ২৪ পরগণার সীমান্ত শহর বনগাঁ সংলগ্ন পেট্রাপোল সীমান্ত কলকাতা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে। বাংলাদেশে সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সব সীমান্তে হাই অ্যালার্টে রাখা হয়েছে। পেট্রাপোল হল অন্যতম জনপ্রিয় সীমান্ত, যা দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় ও বাংলাদেশীদের বাণিজ্য ও দৈনন্দিন চলাচলের সঙ্গে যুক্ত। পেট্রাপোল হল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত ক্রসিংয়ের ভারতীয় অংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র স্থলবন্দর এবং এশিয়ার বৃহত্তম শুল্ক স্টেশন।
এই সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন গড়ে শত শত পণ্য বোঝাই ট্রাক চলাচল করে। বাংলাদেশে অস্থিরতার পরেই বিএসএফ-র ডিজি দলজিৎ চৌধুরী সীমান্তে পৌঁছে সীমান্তে বসবাসরত বিভিন্ন কর্তা ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও পরিবেশে এখনও বেশ অস্থিরতা বিরাজ করছে। সাধারণ দিনে যদি পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে এক হাজার ট্রাক ভারতে আসত, তবে ৬ তারিখের পর থেকে মাত্র ১০ থেকে ১৫ ট্রাক এখান দিয়ে যাওয়া আসা করছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর শুধুমাত্র বৈধ পারমিটধারী ব্যক্তিদের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আজ তক-এর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তামিলনাড়ুর এক চালক জানান, যশোর থেকে আসার সময় তাঁকে বিশেষ কোনও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি।
প্রায় এক ঘণ্টা পর যখন বাংলাদেশ থেকে আসা বিহারের এক চালক ভিন্ন কথা জানান। চালক জানান, তিনি সীমান্তের কাছে জাতীয়সড়কে তলোয়ার ও লাঠি হাতে লোকজনকে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন। তিনি ভাগ্যবান যে তাঁরা আক্রমণ করেননি। তবে সীমান্ত দিয়ে বাড়ি ফেরা বাংলাদেশি হিন্দুদের জন্য স্বস্তির পরিবর্তে বিভ্রান্তি ছিল। তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ফিরতেই ভীত ছিল। বছর ৫০-র রতন রঞ্জন চিকিৎসার জন্য ভারতে এসেছিলেন। যশোরে ফেরার সময় সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে ঘাবড়ে যান তিনি। সীমান্ত পার হওয়ার আগেই ভয় পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারণ তিনি হিন্দু।