'এক দেশ এক নির্বাচন'-এর দাবিকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা ও ঝাড়খণ্ড-সহ একাধিক রাজ্যে একাধিক দফায় নির্বাচন করানো হয়। তাহলে 'এক দেশ এক নির্বাচন' কীভাবে সম্ভব? প্রশ্ন তুললেন তিনি।
ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ এদিন সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, 'এখন এক দেশ এক নির্বাচন নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। অথচ ২০২৪ সাল বাংলার বিধানসভা ভোট সাত দফায় হয়েছে। ২০২১ সালে আট দফায়। ঝাড়খণ্ডের মতো ছোটো রাজ্যেও একাধিক দফায় ভোট করিয়ে থাকে নির্বাচন কমিশন। এরকম যখন অবস্থা তখন এক দেশ এক নির্বাচন কীভাবে সম্ভব? এভাবে ভোট হলে তা মানুষের অধিকার হরণ করার সামিল হবে।'
অভিষেকের দাবি, এক দেশ এক নির্বাচন করলে জনগণের হাত থেকে ক্ষমতা চলে যাবে। তাঁর যুক্তি পঞ্চায়েত, পুরসভা, বিধানসভা ও লোকসভা ভোটের মাধ্যমে জনতা পৃথক পৃথকভাবে তাঁদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকেন। এই অধিকার তাঁদের দিয়েছে দেশের সংবিধান। কিন্তু সেই অধিকার খর্ব করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেজন্য তারা বিলটি এনেছে। তাঁর কথায়, 'কোনও সরকারকে ভালো না লাগলে, জনগণের তাদের শিক্ষা দেওয়ার ক্ষমতা দেয় একাধিক নির্বাচন। কিন্তু সেই নির্বাচনই যদি মাত্র একবার হয় তাহলে তা বিপদের সংকেত। এর বিরোধিতা করা উচিত। সংবিধানের সঙ্গে ছেলেখেলা করার অধিকার এই সরকারকে কেউ দেয়নি। তবে এখন এটাই হচ্ছে।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গেও কথা বলেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়। লালু প্রসাদ যাদবের মতো নেতা মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে ইন্ডিয়া ব্লকের নেত্রী করার পক্ষে সওয়াল করেছেন। তবে কংগ্রেস এর বিরোধিতা করেছে। অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় মনে করেন, ইন্ডিয়া ব্লকের মধ্যে সবথেকে সিনিয়ার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই আলোচনা সাপেক্ষে তাঁকেই সবার উপরে রাখা উচিত।
অভিষেক সেই প্রসঙ্গে বলেন, 'ইন্ডিয়া ব্লকের নেত্রী ঘোষণা মমতা বন্দ্য়োপাধ্যাকে করা উচিত। তা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। তিনি সব থেকে সিনিয়র। ৭ বার সাংসদ থেকেছেন। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। কেন্দ্রে একাধিকবার মন্ত্রি থেকেছেন। তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনিই যোগ্য দাবিদার।'
কংগ্রেসের বিরোধিতা প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, 'আঞ্চলিক দলগুলোকে ছোটো করে দেখে কংগ্রেস ও বিজেপি। এটা কাঙ্খিত নয়। মানুষকে ছোটো করা উচিত নয়। ইন্ডিয়া ব্লকের বাকি যে দলগুলো আছে তারা জোটে থেকে বিজেপিকে হারিয়ে এসেছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস একমাত্র দল যারা কংগ্রেস ও বিজেপি এই দুই বড়দলকেই হারিয়েছে। তৃণমূলের স্ট্রাইক রেট ভালো। তৃণমূল কংগ্রেস একমাত্র দল যেখানে বিজেপি নেতারা এসে যোগ দেয়।'