রাজ্যসভায় সংবিধান নিয়ে বিতর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় বুধবার। শাহের বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করে কংগ্রেস সংসদ চত্বরে বিক্ষোভে সামিল হয়। এদিন রাজ্যসভায় সংবিধান-বিতর্কের সময় অমিত শাহ বলেন, ‘‘এখন এক ফ্যাশন হয়েছে— অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর। এত বার যদি ভগবানের নাম নিত তবে সাত জন্ম স্বর্গবাস হত।’’ তাঁর এই বক্তব্য কংগ্রেসের সঙ্গে অন্যান্য বিরোধী দলগুলিরও ক্ষোভ উসকে দেয়।
এদিন অমিত শাহ সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন। তিনি সংবিধান রক্ষা এবং সংরক্ষণের বিষয়ে তাঁর দলের সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। একাধিক উদাহরণ দিয়ে তিনি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আম্বেদকরের অবমাননা, সংরক্ষণ বিরোধিতা, এবং ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আনেন।
তাঁর দাবি, দল সবসময় সংবিধানের যথাযথ মূল্যায়ন করেছে এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে কাজ করেছে। বিজেপি সরকারের উদ্যোগে সংবিধান দিবস পালনের প্রচলন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে আম্বেদকরের স্মারক নির্মাণ করা হয়েছে। নাগপুর, দিল্লি, লন্ডন, এবং মহারাষ্ট্রে আম্বেদকরের স্মৃতিসৌধ তৈরির মাধ্যমে তাঁর অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস তাদের ক্ষমতায় থাকাকালীন সংবিধান প্রণেতা ড. বি. আর. আম্বেদকরের যথাযথ সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ১৯৯০ সালের আগে কংগ্রেস আম্বেদকরকে ভারতরত্ন প্রদান করেনি এবং তাঁর জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করেনি।
অমিত শাহর অভিযোগ, কংগ্রেস শুধু আম্বেদকর নয়, সংরক্ষণ ব্যবস্থারও বিরোধিতা করেছে। তাঁকে কংগ্রেস ভারতরত্ন দেয়নি। নেহেরু ও ইন্দিরা গান্ধী নিজেরাই নিজেদের ভারতরত্ন দিয়েছে। নেহেরু আম্বেদকরের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতেন এবং তা তাঁর লেখাতেও স্পষ্ট। কংগ্রেস সরকারের সময় কোনও আম্বেদকর স্মারক তৈরি হয়নি, বরং নেহেরু পরিবারের স্মারক নির্মাণে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
অমিত শাহ আরও বলেন, কংগ্রেস আম্বেদকরের অবমাননা এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থার ক্ষতি করেছে। মল্লিকার্জুন খার্গেকে উদ্দেশ্য করে অমিত শাহ জানান, একজন দলিত নেতা হিসেবে তাঁর উচিত ছিল কংগ্রেসের এই মানসিকতার বিরোধিতা করা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচারের অভিযোগ তুলেছেন এদিন। তাঁর দাবি, নির্বাচনের সময় তাদের বক্তব্য এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিগ্যাল অ্যাকশন নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।