দিল্লি বিধানসভা ভোটের সময়ও নেমেছিলেন প্রচার ময়দানে। কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়েছিল দল। তারপর বিহার বিধানসভা নির্বাচন বড় পরীক্ষা ছিল এনডিএ শিবিরের কাছে। পরীক্ষা ছিল মোদীর কাছেও। গত লোকসভা ভোটে আসমুদ্র হিমাচল প্রচার করে বিজেপিকে চূড়ান্ত সাফল্যের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আঙ্গিনায় তাঁর ক্যারিশমা কাজ করে না, এমন অভিযোগ প্রায়শই করতে শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর নিন্দুকদের। তবে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে কিন্তু নিজের ম্যাজিক দেখিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। কড়া টক্কর দিয়ে জোটসঙ্গী জেডিইউ-কে পেছনে ফেলে বিহারে এনডিএ শিবিরের প্রধান দল হয়ে উঠল বিজেপিই।
২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচন থেকেই বিহারে ভোট বাড়ছে বিজেপির। বিহার থেকে ঝাড়খণ্ড আলাদা হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত ৪ টি বিধানসভা ভোট হয়েছে বিহারে। ২০০৫, ২০১০ এর তুলনায় ২০১৫ সালে গোবলয়ের অন্যতম এই রাজ্যে উল্লেখযোগ্য হারে ভোট বেড়েছে বিজেপির।২০১৫-র নির্বাচনে ১৫৭টি আসনে লড়াই করে ৫৭টি-তে জিতেছিল বিজেপি।এবার আগের বারের চেয়ে অনেকটাই আসন বাড়িয়েছে পদ্মশিবির। পেছনে ফেলে দিয়েছে জোটসঙ্গী নীতীশ কুমারের জেডইউকেও। জে পি নড্ডা, অমিত শাহরা প্রচারে এলেও দলের এই সাফল্যের কৃতীত্ব মোদীকেই দিতে চাইছে বিজেপি শিবির।
করোনা আবহে বিহার ভোটে ৩ বার প্রচারে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। সাসারাম, গয়া, ভাগলপুর, দ্বারভাঙা, মুজফ্ফরপুর, পাটনা, ছাপড়া, পূর্ব চম্পারণ, সমস্তিপুর, পশ্চিম চম্পারণ, সহর্ষ এবং ফরবেসগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় মোট ১২টি সভা করেছেন নরেন্দ্র মোদী। ভোটগণনা করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, যেখানে যেখানে প্রচার করেছেন প্রধানমন্ত্রী,সেখানেই ভোট বেড়েছে দলের। তাই মোদী ম্যাজিক যে বিহার বিধানসভা ভোটের ময়দানে কাজে এসছে এমনটাই মনে করছে গেরুয়া শিবির। এদিকে আর কয়েকমাস পরেই বঙ্গে ভোট। ইতিমধ্যে ভোটের প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ঘর গোচ্ছাচ্ছে রাজ্যের শাসক-বিরোধী সব শিবিরই। আর এই আবহে নরেন্দ্র মোদী যে গেরুয়া শিবিরের বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন তা বলাই বাহুল্য।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে একাধিকবার বাংলায় প্রচার করতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লোকসভা ভোটে হাতেনাতে তার ফলও পেয়েছে বিজেপি। অভাবনীয় রেজাল্ট করেছে দল। আর এবারের বিধানসভা ভোটে বাংলা জয় যে তাঁদের লক্ষ্য তা নিয়ে কোনও রাখঢাক করেননি নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ জুটি। ২০২১ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলায় আসতে শুরু করে দিয়েছেন। গত সপ্তাহেই দক্ষিণবঙ্গের সাংগঠনিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে স্বয়ং রাজ্যে আসেন অমিত শাহ। তাই এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বঙ্গ বিজেপির অন্যতম ভোটঅস্ত্র যে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন এমনটা সহজেই অনুমান করে নেওয়া যায়। আর বিহার ভোটের ফলাফল দলীয় কর্মীদের মধ্যে আশা জাগাচ্ছে মোদী সুনামিতে ভর করে বিজেপির নবান্ন জয়ের।