স্পেশাল ট্রেন ভাড়া করেও শেষপর্যন্ত তা মেলেনি। তাই রাজ্যের বকেয়া আদায় করতে বাসেই দিল্লি যাত্রা করেন তৃণমূল কর্মীরা। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে থেকে শনিবার দুপুর থেকেই বাসগুলি দিল্লির উদ্দেশ্য রওনা দেয়। এভাবে বাস ছাড়ে সন্ধে ছটা পর্যন্ত। বাস যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন একশো দিনের কাজের জব কার্ডধারীরা, কারও কারও আবাস যোজনার টাকা আটকে রয়েছে। প্রায় ষোলশো কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবেন তাঁরা। এদিকে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে তৃণমূলের দিল্লিগামী একটি বাস। রবিবার সকাল ৫টা নাগাদ ঝাড়খণ্ডের কোডার্মা এলাকায় মাটির ঢিপিতে ধাক্কা মারে বাসটি। যাত্রীরা সকলেই অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন। বাসের সামনের অংশেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আপাতত যাত্রীদের পুরুলিয়া ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা হবে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসের যাত্রীদের আপাতত দিল্লি যাওয়া হচ্ছে না।
কলকাতা থেকে ছেড়ে বাসগুলি বিহার, উত্তর প্রদেশ পেরিয়ে দিল্লি পৌঁছবে এমনটাই কথা রয়েছে। বাসের যাত্রীদের জন্য খাবার, ওষুধ, মেডিক্যাল কিটের যথেষ্ট ব্যবস্থা রয়েছে বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর। বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মীরা আগেই এসে উপস্থিত হয়েছিলেন নেতাজি ইন্ডোরে। শনিবারই বাসগুলি রওনা দেয়। সূত্রের খবর, দিল্লগামী বাসগুলির মধ্যে একটি বাস এদিন সকালে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। ঝাড়খণ্ডের কোডারমার কাছে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলা থেকে নিম্নচাপটি সরে ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে গিয়েছে। সেখানে হচ্ছে প্রবল বৃষ্টিতে। বৃষ্টির কারণেই এই দুর্ঘটনা বলে জানতে পারা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, কোডারমায় একটা বড় মাটির ঢিপিতে ধাক্কা মারে বাসটি। সামনের ডাম্পার ভেঙে যায়। কয়েকজন জখমও হয়েছেন বলে জানতে পারা যাচ্ছে। তাদের নিয়ে এই মুহূর্তে বাসটা পুরুলিয়া হাসপাতালে গিয়েছে। বাসে ৩৩ জন তৃণমূল কর্মী ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। এদের মধ্যে দুর্ঘটনায় প্রায় ৮ জন অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন বলেই খবর।
বাংলার বঞ্চনার প্রতিবাদে ২ ও ৩ অক্টোবর দিল্লিতে কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের। ১০০ দিনের কাজের জব কার্ড হোল্ডাররা সেই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছেন। একাধিক বাসে চেপে রাজধানীর উদ্দেশ্যে শনিবার দুপুরে রওনা দিয়েছেন তাঁরা। দুর্ঘটনার কবলে পড়া বাসটিও শনিবার দুপুরে রওনা দিয়েছিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে। বাসের যাত্রীরা জানিয়েছেন, সকাল ৫টা নাগাদ প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল ঝাড়খণ্ডের কোডার্মার সূর্যকুন্ড এলাকায়। রাস্তার কাজও চলছিল। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা ছিল না। এমনকী, বিকল্প রাস্তা সম্পর্কেও কিছু বলা ছিল না। একটি রাস্তায় বাঁক নিতে গিয়ে বিপত্তি বাঁধে। বাঁকের মুখেই মাটি ঢিপি করে রাখা ছিল। উলটোদিক থেকে একটি লরিও আসছিল। সেই সময় বাঁক নিতে গিয়ে সামনে থাকা মাটির ঢিপিতে ধাক্কা মারে বাসটি। বাসের গতি তখন ছিল ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার। বাসের সামনের অংশ তুবড়ে যায়। যাত্রীরাও অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন। তাঁদের ১০০ কিলোমিটার দূরে থাকা দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হচ্ছে। বাস চালক জানিয়েছেন, বাসের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত। এই বাস নিয়ে দিল্লি যাওয়া যাবে না। দিল্লি পুলিশ বাস নিয়ে দিল্লিতে ঢুকতে দেবে না।