শেষ রায়ে 'বুলডোজার বিচার'-এর তীব্র সমালোচনা করলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি(বিদায়ী) ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড় । তিনি বলেন, 'আইনের শাসনের অধীনে বুলডোজার বিচার একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। যদি এটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়, তবে ৩০০এ ধারার অধীনে সম্পত্তির অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতিও অকেজো হয়ে যাবে।'
সিজেআই তাঁর রায়ে আরও বলেন, 'বুলডোজারের মাধ্যমে বিচার কখনই কোনও সভ্য বিচারব্যবস্থার অংশ হতে পারে না।'
তিনি বলেন, 'নাগরিকদের আওয়াজ তাঁদের বাড়ি ও সম্পত্তি ভাঙার হুমকি দিয়ে স্তব্ধ করা যায় না। একজন মানুষের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হল তাঁর বাড়ি।' সিজেআই আরও বলেন, নাগরিকদের সম্পত্তির বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আগে কিছু ন্যূনতম নিরাপত্তার নিয়ম অনুসরণ করা উচিত।
রায়ে বলা হয়, 'অবৈধ দখল বা অবৈধ নির্মাণ অপসারণের আগে রাষ্ট্রকে আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। আইনের শাসনের অধীনে বুলডোজার বিচার সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। যদি এতে অনুমোদন দেওয়া হয়, তবে ৩০০এ ধারায় সম্পত্তির অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি অকেজো হয়ে যাবে।'
সিজেআই বলেন, 'যেসকল আধিকারিকরা এই ধরনের অবৈধ কাজ চালান বা অনুমোদন দেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। অপরাধমূলক কাজের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।' তিনি আরও বলেন, 'পাবলিক এবং প্রাইভেট সম্পত্তি সম্পর্কিত কোনও পদক্ষেপেও আইনানুগ প্রক্রিয়া মেনে সেটা করতে হবে।'
সর্বোচ্চ আদালত ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জে একটি বাড়ি ভাঙার ঘটনার রায় দিয়েছে। আদালত রাজ্য প্রশাসনের পদক্ষেপকে 'কঠোর' হিসেবে উল্লেখ করে এবং আবেদনকারীকে অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই বাড়িটি একটি সড়ক প্রকল্পের জন্য ভাঙা হয়েছিল।
ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড়ের মেয়াদকাল ১০ নভেম্বর শেষ হচ্ছে। ৮ নভেম্বর ছিল তাঁর 'শেষ কর্মদিবস'। মেয়াদকালে, জনস্বাধীনতা, সংবিধানের ব্যাখ্যা এবং মানি লন্ড্রিং সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলা নিয়ে কাজ করেছেন। নভেম্বরে ২০২২ থেকে নভেম্বরে ২০২৪ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট ১,১১,৪৯৮ টি নতুন মামলার শুনানি করেছে এবং ১,০৭,৪০৩ মামলার নিষ্পত্তি করেছে।