বঙ্গোপসাগরে মোকা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে চলেছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবনের। ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে সে ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত আবহবিদরা। সেই সঙ্গে খোঁজ মিলল মোকার গতিপ্রকৃতিরও। সম্ভাব্য মোকা ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে একাধিক মিল রয়েছে আমফানের। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। কী রকম?
এখনও পর্যন্ত মৌসম ভবন যা জানিয়েছে, সোমবার সকালে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্ত পরিণত হয়েছে নিম্নচাপে। মঙ্গলবার তা থেকে তৈরি হতে পারে গভীর নিম্নচাপ। ১০ মে, বুধবারের মধ্যে গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগরে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নামই মোকা।
আবহবিদরা বলছেন, ২০২০ সালের ঘূর্ণিঝড় আমফানের সঙ্গে মোকার রয়েছে একাধিক মিল। আমফানের ক্ষেত্রেও পূর্বাভাসের বেশ কয়েকদিন পর তৈরি হয়েছিল ঘূর্ণাবর্ত। ২০২০ সালে ১৩ মে সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্ত পরে আমফানের আকার নেয়। সেবারও মে মাসেই তৈরি হয়েছিল আমফান। এবারও মে মাস। আমফান যেখানে তৈরি হয়েছিল আসন্ন ঝড় ওই একই অঞ্চলে তৈরি হতে পারে।
আমফান ও মোকার 'ল্যান্ডফল' নিয়ে কী মিল?
মৌসম ভবন জানিয়েছে, বুধবার মোকা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার পর তা এগিয়ে যাবে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক বরাবর। আগামী ১১ মে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোকার অভিমুখ থাকবে উত্তর-পশ্চিমেই। বৃহস্পতিবারের পর মোকা দিক পরিবর্তন করবে। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে সেটি উল্টো দিকে বাঁক নিতে পারে বলে পূর্বাভাস। মোকা ধীরে ধীরে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে ঘুরে যাবে। ক্রমশ এগোবে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের দিকে। ফলে বাংলার জন্য কোনও আশঙ্কার কারণ থাকছে না। কিন্তু এখানেও সেই আমফানের কথা মনে করাচ্ছেন আবহবিদরা। তাঁরা বলছেন,আমফানের প্রাথমিক পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশ বা মায়ানমারে যেতে পারে সেটি। পরে সেটি পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে 'ল্যান্ডফল' করে।
আরও পড়ুন- ফ্যান চুরি রুখতে এই বুদ্ধি ব্যবহার করে রেল, জানলে চমকে যাবেন
ঘূর্ণিঝড় কতটা শক্তিশালী হবে, বাংলাদেশ, মায়ানমারে আঘাত হানার পর কেমন তাণ্ডব চালাতে পারে, সে ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট করে জানায়নি মৌসম ভবন। তবে এখনও পর্যন্ত এটা নিশ্চিত করে বলা যায়, ঝড় পশ্চিমবঙ্গকে পাশ কাটিয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্বে এগিয়ে বাংলাদেশ, মায়ানমারের দিকে চলে যাবে। ফলে বাংলায় তেমন প্রভাব পড়বে না বলেই এখনও পর্যন্ত পূর্বাভাস। সোমবার ও মঙ্গলবার আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন।