২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরার মাটি থেকে বিজেপি সরকারকে উৎখাত করবেন বলে বারেবারেই কার্যত প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেই মতো বাংলার পার্শ্ববর্তী এই রাজ্যে লাগাতার রাজনৈতিক কর্মসূচিও চালিয়ে যাচ্ছে ঘাসফুল শিবির। কিন্ত তারপরেও মাঝেমধ্যেই দলের দেখা যাচ্ছে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষের বাতাবরণ, যা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল নেতৃত্বকে খুব একটা স্বস্তিতে রাখছে না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
গতবছর কালীঘাটে এসে মাথা ন্যাড়া করে একপ্রকার প্রায়শ্চিত্ত করে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন আশিস দাস। কিন্ত বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বদলে যায় চিত্রটা। মাসকয়েক আগে একেবারে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। তৃণমূল নেতাদের 'বাটপার' আখ্যা দিয়ে আশিস দাস দাবি করেন 'ত্রিপুরার মানুষ কখনওই তৃণমূলকে মেনে নেবে না।' অন্যদিকে তাঁর বিরুদ্ধে সেই সময় নিয়ম বিরুদ্ধ কাজের অভিযোগ তুলেছিলেন ত্রিপুরায় তৃণমূলের তৎকালীন শীর্ষ নেতা সুবল ভৌমিক (Subal Bhowmik Tripura)। তারপরে মাঝে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধান। এবার সেই সুবল ভৌমিককেও ত্রিপুরায় দলের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরালো তৃণমূল। সুবলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি নিজের কাছের লোকজনদের বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছিলেন। এমনকী গোপনে যোগাযোগ রাখছিলেন বিজেপির সঙ্গেও।
কী বলছে তৃণমূল?
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যদি নির্বাচনের কয়েক মাস আগে দলের মধ্যেই এই অবস্থা চলতে থাকে তাহলে কীভাবে বিধানসভা ভোটে সামাল দেবে তৃণমূল? এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya) জানান, "এটা কোনও ব্যাপার নয়, এটা একটা কন্টিনিউয়াস প্রসেস, বিভিন্ন জায়গায় আরও যোগ্যতর মানুষকে জায়গা করে দিতে হয়। তাঁকে কনভেনর করে আমরা পৌরসভা নির্বাচনে যাই। সেখানে মোটমুটি ভাল ফল করি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট করার পর উপনির্বাচনে ভাল ফল করতে পারিনি। আর সময় যেহেতু এখন কম, তাই একজনের ওপরে দীর্ঘসময় আস্থা রাখার সুযোগটাও আমাদের নেই। নতুন জায়গা থেকে নিয়ে টেস্ট করতে হবে। তৃণমূলে কালেকটিভ লিডারশিপে কাজ হয়। সেই জায়গা থেকে মনে হয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা হবে না। বরং যা হল ভালর জন্যই হল।" তবে আগামী বছরের নির্বাচনে দলের এই অভ্যন্তরীণ উত্থানপতন বাস্তবেই তৃণমূলের কাছে কোনও বিড়ম্বনার কারণ হয় কিনা সেটা অবশ্য সময় বলবে।
আরও পড়ুন - BRO-তে প্রায় আড়াইশো চাকরি, শেষ তারিখ কবে? রইল খুঁটিনাটি