দিল্লির আফগারি কেলেঙ্কারিকাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ED-র চার্জশিট নিয়ে সামনে এল বড় তথ্য। এই কাণ্ডে আম আদমি পার্টি এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কীভাবে যুক্ত তার তথ্য চার্জশিটে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়াও হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচারের অভিযোগে চরণপ্রীতকে অভিযুক্ত করেছে ইডি। কেজরিওয়াল এবং বিনোদ চৌহানের মধ্যে কথাবার্তা, তাঁদের মধ্যে কেমন সম্পর্ক ছিল তারও উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে।
Aajtak চার্জশিটের বিবরণ হাতে পেয়েছে। সেখানে ব্যাঙ্ক নোট, সিরিয়াল নম্বর এবং হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটগুলির ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ রয়েছে। চার্জশিটে স্পষ্ট বলা হয়েছে, আম আদমি পার্টিও আফগারি কেলেঙ্কারিকাণ্ডে জড়িত। চার্জশিটে AAP-কে ৩৮ নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইডির অভিযোগপত্র অনুযায়ী, এই কাণ্ডে মোট ১০০ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ৪৫ কোটি টাকা সরাসরি AAP-কে দেওয়া হয়েছে। এই অর্থ হাওয়ালার মাধ্যমে গোয়ায় পাঠানো হয়েছিল।
চার্জশিটে, ইডি অপরাধের প্রক্রিয়ার কথাও উল্লেখ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত বিনোদ চৌহানের মোবাইল থেকে হাওয়ালা নোট নম্বরের অনেকগুলি স্ক্রিনশট উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলো আয়কর আগেও উদ্ধার করেছিল। এই স্ক্রিনশটগুলো থেকে প্রমাণিত হয় কীভাবে বিনোদ চৌহান অপরাধের অর্থ হাওয়ালার মাধ্যমে দিল্লি থেকে গোয়াতে পাঠিয়েছিলেন। এই গোটা প্রক্রিয়াটি চরণপ্রীত সিং পরিচালনা করছিলেন। হাওয়ালার মাধ্যমে গোয়ায় পাঠানো অর্থ নিয়ে বিনোদ চৌহান এবং অভিষেক বোইনপল্লির মধ্যে কথোপকথনের প্রমাণও রয়েছে ইডি-র হাতে।
ইডির দাবি, হাওয়ালার টাকা স্থানান্তর সম্পর্কিত বিনোদ চৌহান এবং অভিষেকের মধ্যে একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও রয়েছে। হাওয়ালার টোকেন মানির স্ক্রিনশটও জমা দিয়েছে ইডি। গোয়া নির্বাচনে হাওয়ালার মাধ্যমে ৪৫ কোটি টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে চরণপ্রীত সিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। চরণপ্রীতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ যাচাই করা হয়েছে তদন্তকারীদের তরফে। তিনি AAP থেকে সরাসরি ১ লাখ টাকারও বেশি পেয়েছিলেন। চরণপ্রীত সিং রথ প্রোডাকশন মিডিয়ার একজন কর্মচারী ছিলেন এবং ২০২০ সাল থেকে ফ্রিল্যান্স হিসাবে AAP-এর গোয়া নির্বাচনী প্রচারের অংশ ছিলেন।
কেজরিওয়াল বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন:
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং সি অরবিন্দের (তৎকালীন সেক্রেটারি মনীশ সিসোদিয়া) মধ্যে পরস্পরবিরোধী বিবৃতি প্রমাণ করে, কীভাবে অরবিন্দ কেজরিওয়াল তদন্তকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। সংস্থাটির আরও দাবি, এই মামলায় বিপুল সংখ্যক প্রমাণও ধ্বংস করা হয়েছে।
ইডির চার্জশিট অনুসারে, বিনোদ চৌহানের ফোন থেকে এমন কিছু ছবি পাওয়া গেছে, যা আফগারি কাণ্ডে অরবিন্দ ও আম আদমি পার্টির যুক্ত থাকার অভিযোগকে প্রমাণিত করতে পারে। এই নিয়ে এই কাণ্ডে সপ্তম চার্জশিট জমা দিল ইডি। এই চার্জশিটে মোট ৩৮ জন অভিযুক্ত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, দিল্লির আফগারি দুর্নীতি কাণ্ডে সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ২১ মার্চ ইডি গ্রেফতার করেছিল। কেজরিওয়াল বর্তমানে তিহার জেলে রয়েছেন।