Sikkim Hydropower loss 327 Crore: ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর। দুর্গাপুজোর আগে সিকিমের সাউথ লোনাক হ্রদ জল ধরে রাখতে না পেরে ফেটে পড়ে। তার ফলে তিস্তা নদীতে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি হয়। তিস্তার জলে ভেসে যায় প্রচুর মানুষ, পশু থেকে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প। প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়। ক্ষয়ক্ষতি হয় প্রচুর। যার আবহ থেকে এখনও বেরিয়ে উঠতে পারেনি উত্তর সিকিম। এক বছর থেকে পর্যটক যাতায়াতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যা চলতি মরশুমেও জারি রয়েছে।
সেই ভয়ঙ্কর দুর্যোগের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে তিস্তা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও। হ্রদ ফেটে যাওয়ার জেরে তিস্তা-৫ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩২৭ কোটি টাকা বলে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে। ন্যাশনাল হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন বা এনএইচপিসি (NHPC) এই ক্ষতির রিপোর্ট জমা দিয়েছে বিমাকৃত সংস্থাকে।
মঙ্গলবার এই রিপোর্ট জমা পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। গত বছর ওই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর থেকেই ৫১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি বন্ধ। প্রকল্পটি এমনিতেই প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে। তার উপর উৎপাদন বন্ধ থাকায় ক্ষতির পরিমাণ লাফিয়ে বাড়ছে। ২০ অগাস্ট পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করা হয়েছে। তার পরিমাণ ৩২৭.৬৭ কোটি টাকা। আপাতত আরও ২ মাস পার হয়েছে, সেই পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা।
মঙ্গলবার এনএইচপিসির তরফে জানানো হয়েছে, প্রকল্পের ক্ষতি এবং উৎপাদন বন্ধ থাকা (২০ অগাস্ট পর্যন্ত) মিলিয়ে ৩২৭.৬৭ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষতির পরিমাণ জানিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে বিমা কোম্পানিকে। এখন ওই বিমা সংস্থাটি নিজেদের দল পাঠিয়ে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত হবে এবং সেই মোতাবেক এনএইচপিসিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা দেবে। এনএইচপিসির এক আধিকারিক বলছেন, ‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে ক্ষতি সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে এবং তা বিমা সংস্থাকে জমা দেওয়া হয়েছে। ফলে টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা বা দেরি হওয়ার কথা নয়।’
সিকিমে যে চারটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে, তার মধ্যে বর্তমানে রঙ্গিত জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বিদ্যুৎ উৎপাদন জারি রেখেছে। তাদের ক্ষমতা অবশ্য অত্যন্ত কম ৬০ মেগাওয়াট। বাকিগুলি বন্ধ। সেগুলিরও ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাকিগুলির রিপোর্ট তৈরি করে তা বিমা সংস্থার কাছে জমা দেওয়া হবে। এদিকে, ক্ষতি সামলাতে তিস্তা-৬ প্রকল্পের কাজও দ্রুত শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২৬-এর মধ্যে তিস্তা-৬ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন সংস্থার কর্তারা।