ঠিক ২২ বছর আগে ১৩ ডিসেম্বর সংসদে হামলা হয়েছিল। একই তারিখে বুধবার আবারও ভেঙে পড়ল গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। লোকসভার দর্শক গ্যালারি থেকে দুই যুবক ঝাঁপ দেন। স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা টেবিলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সাংসদের দিকে ছুটতে শুরু করেন এবং জুতোর মধ্যে লুকিয়ে রাখা রঙিন ধোঁয়া স্প্রে করতে থাকেন। এখন প্রশ্ন যে সংসদে তিন স্তরের নিরাপত্তা রয়েছে, সেখানে কীভাবে জুতোয় রঙিন ধোঁয়া লুকিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লেন দুজন। যে সংসদের ভেতরে মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া যায় না, সেখানেই দর্শক গ্যালারি থেকে দুজন লোক ঝাঁপিয়ে পড়ল হাউসে।
সংসদের নিরাপত্তা ভঙ্গকারীর সংখ্যা ৬ জন বলে জানা গেছে। যার মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তের এন্ট্রি পাস মহীশূরের বিজেপি সাংসদের সুপারিশে তৈরি করা হয়েছিল। বিরোধীরা এখন প্রশ্ন করছে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? ধৃতরা চারটি ভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দা। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্ত সাগর, মনোরঞ্জন, নীলম ও অমল শিন্ডেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পর ভার্চুয়াল গ্যালারিতে প্রবেশের জন্য পাস দেওয়া আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, চারজনই একে অপরকে চিনতেন। তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরের সঙ্গে যুক্ত এবং সেখানেই গোটা পরিকল্পনাটি তৈরি হয়েছিল বলে সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন মোট ৬ জন। দুই ব্যক্তি লোকসভার ভিতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, অন্য দুইজন বাইরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। দুই সন্দেহভাজন বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তাঁদের খোঁজ চলছে। দিল্লির বাইরে থেকে আগত পাঁচ ব্যক্তি গুরুগ্রামে ললিত ঝা নামে পরিচিত এক ব্যক্তির বাড়িতে উঠেছিলেন। বাকি পাঁচজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেলেও ষষ্ঠ ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। সংস্থার অভ্যন্তরীণ সূত্রের মতে, পুরো অপারেশনটি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছিল।
অনুপ্রবেশকারীদের সম্পর্কে আমরা যা জানি
মহীশূরের সাংসদ প্রতাপ সিমার অতিথি হিসেবে দর্শক গ্যালারিতে এসেছিলেন শঙ্করলাল শর্মার ছেলে সাগর শর্মা। মনোরঞ্জন ডি মহীশূরের বাসিন্দা। তিনি বেঙ্গালুরুর বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি পাবলিক গ্যালারি থেকে লাফ দিয়েছিলেন। সংসদের বাইরে বিক্ষোভ করতে গিয়ে ধরা পড়া নীলম হরিয়ানার হিসারের একটি পিজিতে থাকেন। তিনি হরিয়ানা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অন্যদিকে, অমল মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলার বাসিন্দা। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, নীলম বা অমল কারও কাছেই মোবাইল ফোন ছিল না। তাঁদের কাছে কোনও ব্যাগ বা কোনও পরিচয়পত্র ছিল না।