কাশীর জ্ঞানবাপীতে (Gyanvapi Mosque) পুজো নিয়ে আদালতের রায়ে হতাশা প্রকাশ করল মুসলিম পার্সোনাল ল'বোর্ড। বোর্ডের বক্তব্য, মানুষ আদালতের উপর আস্থা হারাচ্ছে। বুধবার বারাণসীর জেলা আদালত জ্ঞানবাপী কমপ্লেক্সে অবস্থিত ব্যাসজির বেসমেন্টে হিন্দুপক্ষকে পুজো করার অধিকার দিয়েছে। যা নিয়ে মুসলিম পক্ষ বিরক্তি প্রকাশ করল। আদালতের নির্দেশ রীতিমতো প্রশ্ন তুলল মুসলিম পার্সোনাল ল'বোর্ড (All India Muslim Personal Law Board)।
আদালতের রায় নিয়ে প্রশ্ন
মুসলিম পার্সোনাল ল' বোর্ডের সইফুল্লাহ রহমানির কথায়, ‘আমাদের আদালত এখন এমন পথে হাঁটছে, মানুষ তাদের ওপর আস্থা হারাচ্ছে। অনেক আইন বিশেষজ্ঞও এটা বিশ্বাস করেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) যে ঘটনা ঘটেছে তা হতাশাজনক। সেখানে একটি মসজিদ আছে। এই সিদ্ধান্তে ২০ কোটি মুসলমান এবং সমস্ত ন্যায়প্রিয় নাগরিক গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছেন। মুসলমানদের অবস্থা শোচনীয়। যে সমস্ত হিন্দু এবং শিখরা বিশ্বাস করেন তারা ধর্মের তোড়া, তারা এই সিদ্ধান্তে হতবাক।'
তাঁর কথায়, 'তারিখের ঐতিহাসিক সত্য আমাদের বোঝা উচিত। ব্রিটিশরা এদেশে এসে ডিভাইড অ্যান্ড রুল নীতি গ্রহণ করেছিল। ১৮৫৭ সালে তিনি দেখলেন, দেশের জন্য উপাসক এবং ঈশ্বরের উপাসক উভয়ই ঐক্যবদ্ধ। এরপর তারা দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে অর্থাৎ তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করতে কাজ করে।'
'আমাদের সুযোগ দেয়নি'
সইফুল্লাহ রহমানি আরও বলেন, 'মুসলমানদের যদি অন্যের উপাসনালয় জোর করে দখল করার চিন্তা থাকত, তাহলে কি এত মন্দির থাকত? আদালত যে তাড়াহুড়ো করে তার সিদ্ধান্ত নিয়ে পুজোর অনুমতি দিয়েছে, তা অন্য পক্ষকে তার মামলা উপস্থাপনের সুযোগও দেয়নি। এ কারণে বিচার প্রদানকারী আদালতের প্রতি আস্থা কমে গিয়েছে। বাবরি মসজিদের সিদ্ধান্তে আদালত মেনে নেয় যে মসজিদের নীচে কোনও মন্দির নেই কিন্তু একটি অংশের বিশ্বাসের কথা বিবেচনা করে তার পক্ষেই রায় দেওয়া হয়েছে।'
'ইসলামে ছিনিয়ে নেওয়া জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা যায় না'
সইফুল্লাহ রহমানি বলেন, জ্ঞানবাপী ও কোনও মসজিদ সম্পর্কে যা বলা হয় যে মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করা হয়েছে তা ভুল, ইসলামে ছিনিয়ে নেওয়া জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা যায় না। প্রথম যে মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল সেটিও কেনা হয়েছিল।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দৈনিক পাঁচ দফা আরতি-পূজাপাঠ হবে জ্ঞানবাপীর তহখানায়। ভোর সাড়ে ৩টেতে ‘মঙ্গলা’, দুপুর ১২টায় ‘ভোগ’, বিকেল ৪টেতে ‘অপরাহ্ন’, সন্ধ্যা ৭টায় ‘সায়াহ্নকাল’ এবং রাত সাড়ে ১০টায় ‘শয়ন’। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে জ্ঞানবাপী লাগোয়া কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পুরোহিতই আরতি ও পূজার্চনা করেছেন বৃহস্পতিবার।