খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কানাডার একটি সংবাদপত্রে প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা করা হয়েছিল। সংবাদপত্রের এই প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করল ভারত। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতি জারি করে এই ধরনের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনকে হাস্যকর বলে অভিহিত করেছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, 'আমরা সাধারণত মিডিয়া রিপোর্টে মন্তব্য করি না। তবে, কানাডিয়ান সরকারের একটি সূত্রের দ্বারা সংবাদপত্রে কথিত এই ধরনের হাস্যকর বিবৃতি অবশ্যই তাদের প্রাপ্য অবমাননার সঙ্গে খারিজ করা উচিত। এই ধরনের মানহানিকর প্রচার দুই দেশের সম্পর্ককে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।'
কানাডার প্রতিবেদনে কী আছে?
একটি কানাডিয়ান সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কানাডিয়ান জাতীয় নিরাপত্তা কর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে নিজ্জর হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে এই পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে এই দাবিকে সমর্থন করার কোনও প্রমাণ নেই কানাডার কাছে। কানাডার কাছে কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ নেই যে প্রধানমন্ত্রী মোদী এই বিষয়ে জানতেন। ভারতের তিনজন সিনিয়র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রধানমন্ত্রী মোদীকে না জানিয়ে এতবড় বিষয়ে এগিয়ে যাবেন, এমনটা কল্পনা করা যায় না।
এই প্রথমবার এই ঘটনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী, এস জয়শঙ্কর এবং অজিত ডোভালের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনা হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর করা আগের অভিযোগ নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্ক আরও বেড়েছে। নিজ্জর হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে গত বছর থেকে ভারত-কানাডার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল কানাডা। যা ঘিরে দুই দেশের সম্পর্কে চাপানউতর শুরু হয়। সম্প্রতি ট্রুডো দাবি করেন যে, 'কানাডার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে ভারত। এটা বড় ভুল।' শুধু তাই নয়, ট্রুডো ফের বলেন যে, 'নিজ্জর হত্যায় জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ দেওয়া হলেও নয়াদিল্লি তা অস্বীকার করছে।' গত বছর নিজ্জর হত্যায় যোগ আছে অভিযোগ তুলে এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিল কানাডা। অবশেষে সেই ট্রুডোই স্বীকার করলেন যে, এই ঘটনায় ভারতের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ দিকে পারেননি তাঁরা। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে কানাডায় ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারের একটি গুরুদ্বারের সামনে নিজ্জরকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন ট্রুডো। তারপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে চিড় ধরে।