চাঁদে পৌঁছে গিয়েছে। সূর্যেরও কাছে ভারত। এবার পালা শুক্রগ্রহের। সৌরমণ্ডলের দ্বিতীয় গ্রহ। ঘন বায়ুমণ্ডল আবৃত গ্রহ। আকাশে সূর্য ও চাঁদের পর যাকে সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখা যায়, সেই গ্রহটি শুক্র। বাঙালির শুকতারা। যখন কম্পাসের আবিষ্কার হয়নি, তখন এই শুকতারা বা শুক্রগ্রহ দেখেই দিক নির্ণয় করত মানুষ। রোমে এই গ্রহকে দেবী মানা হয়।
শুক্রগ্রহের চৌম্বকীয় শক্তি খুবই কম। বায়ু মণ্ডল কার্বন ডাই অক্সাইডে ঠাসা। সারাক্ষণ মারাত্মক সালফিউরিক অ্যাসিডের বৃষ্টি চলতে থাকে। ভয়ানক মাত্রায় গ্রিনহাউস গ্যাস। তাপমাত্রা ৪৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যায়। শুক্রগ্রহে বায়ুমণ্ডলের চাপ বা প্রেসার আমাদের পৃথিবীর চেয়ে ৯২ গুণ বেশি। ৫০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্তও চলে অ্যাসিড বৃষ্টি। শুক্রগ্রহ সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় ৫৮৩.৯২ দিন। অর্থাত্ শুক্রগ্রহে একবছর পৃথিবীর চেয়ে প্রায় দেড় গুণ বেশি। যদিও শুক্রগ্রহের ওজন, আয়তন পৃথিবীর চেয়ে কম। এই গ্রহে সর্বপ্রথম মহাকাশযান পাঠানো হয়েছিল ১৯৬১ সালে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন Venera 1 মহাকাশযান পাঠিয়েছিল শুক্রগ্রহে। কিন্তু ওই মহাকাশযানের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরের বছরেই আমেরিকার Mariner 2 মিশন সফল হয়।
বর্তমানে শুক্রগ্রহে একটিই মিশন চলছে। জাপানের অকতসুকি মিশন। একাধিক দেশ শুক্রগ্রহে প্রাণের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী বছর মিশন শুক্রগ্রহ লঞ্চ করতে পারে ভারতও। যদি ২০২৪ সালে না হয়, পরবর্তী টার্গেট হবে ২০৩১ সাল। শুক্রযান পাঠানোর জন্য ২০২৬ থেকে ২০২৮ সাল রয়েছে ইসরোর কাছে। এছাড়া ব্যাক আপ প্ল্যান ২০৩১।
নাসা ও ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সিও ২০৩১ সালে নিজেদের শুক্র মিশন প্ল্যান করে রেখেছে। ওদিকে চিনও সম্ভবত ২০২৬ বা ২০২৭ সালে শুক্রগ্রহে মহাকাশযান পাঠাবে। যদিও চিনের মিশন ঘিরে রহস্য রয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্বের তাবড় দেশের নজরে এবার শুক্রগ্রহ। ভারতের শুক্রযান একটি অরবিটার মিশন। অর্থাত্ মহাকাশযান শুক্রগ্রহের চারদিকে প্রদক্ষিণ করবে। শুক্রগ্রহে আবহাওয়া ও আগ্নেয়গিরিগুলি সম্পর্কে তথ্য পাঠাবে।
ভারতের শুক্রযান মিশনের কার্যকাল ৪ বছর। জানা যাচ্ছে, GSLV Mark II রকেটের মাধ্যমে শুক্রযান পাঠাবে ISRO। শুক্রযানে ওজন আড়াই হাজার কিলো হবে।