এক বছর আগের ঘটনা। ২২, মার্চ ২০২০। আজকের দিনে ছিল জনতা কার্ফু। দেশে একটু একটু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এ দেশের ওই ভাইরাস সংক্রমণের কয়েকটি ঘটনার কথা জানতে পারা গিয়েছে।
২০২০ সালে এই সময়ের মধ্যে বাংলাতেও করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া গিয়েছে। কী করে রোগ মোকাবিলা করা হবে, সে ব্যাপারে উদ্বিগ্ন দেশ-দুনিয়ার চিকিৎসক, বিজ্ঞানীরা।
গত বছর ২২ মার্চ জনতা কার্ফুর পালনের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কোনও দরকারি কাজ ছাড়া বাইরে যেতে মানা করা হয়েছিল। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে অনেকে রাস্তার বেরিয়েছিলেন। এ নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ, মঙ্গলবার। ওইদিন রাতের দিকে জানা গেল করোনা আক্রান্ত এক রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে রাজ্যে। তিনি রাজ্য সরকারের এক আমলার ছেলে। তিনি ছিলেন বিদেশে। কলকাতায় এলে তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয়। এবং ফলাফল পজেটিভ আসে।
এরপর তো আরও কয়েকজনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যাবে। জানা গিয়েছিল, ওই আমলার ছেলে বিদেশে থাকার সময় যাঁদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদের কয়েকজনের করোনা ধরা পড়েছিল।
আর তার পরই তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয়। আর তারপরেই এ দেশে ফেরার পর তাঁর। করোনা পরীক্ষা হয়। এবং ফলাফল পজিটিভ আসে। ওইদিন থেকে তাঁকে রাখা হয়েছিল বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল।
ততদিনে অবশ্য রাজ্য সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে প্রবল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মানুষ। সমাজের সব স্তরের মানুষ প্রভাবিত হয়েছেন। অনেক মানুষ চাকরি খুইয়েছেন। অনেকের আয় কমে গিয়েছে। অনেক আত্মঘাতীও হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরাসরি যতটা ক্ষতি করেছে তার থেকে বেশি পরোক্ষভাবে ক্ষতি করেছে। এবং এখনও করে চলেছে। রোগ মোকাবিলা এবং আর্থিক পরিকাঠামো ঠিক রাখতে রাজ্য সরকার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিল।
করোনাভাইরাসের সংমক্রমণ রুখতে কী করা দরকার, তা নিয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছিল রাজ্য। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা, বার বার হাত ধোওয়া নিয়ে লাগাতার চালিয়ে ছিল রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তায় নেমে কি করা উচিৎ, তা-ও জানিয়েছিলেন। বিভিন্ন সময় ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। কোথায় কী অবস্থা, তা জানার চেষ্টা করেছিলেন, নির্দেশ দিয়েছিলেন।
দেশে জুন মাস থেকে শুরু হয় আনলক। ধাপে ধাপে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করে। যানবাহন চলাচল বাড়ে। নজিরবিহীন দুর্গাপুজো দেখেছিল কলকাতা এবং রাজ্য। সেখানে দর্শকদের প্রবেশের অনুমতি প্রায় ছিল না বললেই চলে।
তবে আশঙ্কার কথা হল করোনা সংক্রমণ ফের বাড়ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। আর আশার কথা হল, ইতিমধ্য়ে বাজার অনেকগুলি টিকা চলে এসেছে। আরও কয়েকটি আসতে চলেছে। দেশে টিকাকরণের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।