আরজি কর মেডিকেল কলেজে এক তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় এক মাস পর আজ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চে মামলাটি শুনানি চলছে। এদিন সিবিআই তদন্তের স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করে। আদালত সিল করা খামে সিবিআইয়ের রিপোর্টটি পর্যালোচনা করে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে মামলার আরও তদন্তের জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেয়।
সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন ও রাজ্য সরকারের জবাব
শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি জানতে চান, নির্যাতিতার মৃত্যুর সময় এফআইআর কখন নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর উত্তরে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুপুর ২:৫৫ টায় এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং দুপুর ১:৪৭ টায় মৃত্যু শংসাপত্র তৈরি করা হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা চান, যার উত্তরে রাজ্য জানায়, থানায় ডায়েরি দুপুর ২:৫৫ টায় নথিভুক্ত করা হয়েছিল। আদালত পুলিশের দেরি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়।
সিবিআইয়ের দাবি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বক্তব্য
সিবিআই-এর আইনজীবী তুষার মেহতা অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কিছু তথ্য গোপন করছে। তবে, রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবাল জানান, রাজ্য সরকার এখনও সিবিআইকে সমস্ত তথ্য সরবরাহ করেনি এবং সেই কপি আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
মামলার পটভূমি
গত ৯ অগস্ট, কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজে এক তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে, যা পুরো রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। মামলাটি নিয়ে আন্দোলন এবং প্রতিবাদের ঢেউ দেখা যায়। মামলার তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ, তবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটি সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ
মামলার এক মাস পূর্ণ হতে চলেছে, এবং এই ঘটনায় ন্যায়বিচারের দাবিতে রবিবার কলকাতার রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ছাত্রছাত্রী, চিকিৎসক, রিকশাচালক এবং প্রতিমা শিল্পী-সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেন। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন স্কুলের প্রায় চার হাজার প্রাক্তন শিক্ষার্থীও এই প্রতিবাদে অংশ নেয়, যেখানে তারা ২ কিলোমিটার হাঁটে এবং "উই ওয়ান্ট জাস্টিস" স্লোগান দেয়।