রাত পোহালেই মহারাষ্ট্রে ভোটগ্রহণ। এবার মহারাষ্ট্রের ভোটের ফল কী হবে, তা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে। মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে গত কয়েক বছরে নানা পালাবদল ঘটেছে। শিবসেনা, এনসিপির মতো তাবড় দলের মধ্যেই অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। দলে দলে কোন্দলের ঠেলায় রাজনৈতিক সমীকরণের বদল ঘটেছে। কুর্সি দখলের লড়াইয়ে সব দলই এবার উঠেপড়ে লেগেছে।
এবার মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে জোর লড়াই। সিংহাসন ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপিও। মহারাষ্ট্রের ভোট রাজনীতিতে এবার পদ্ম শিবিরের দুটি স্লোগান প্রতিধ্বনিত হয়েছে। একটি হল 'বাটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে'। আর একটি হল, 'এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়।' মহাযুতির অজিত পাওয়ার নিজেকে এই স্লোগান থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। অন্য দিকে, বিজেপির স্লোগান মোকাবিলায় উঠেপড়ে লেগেছে মহাবিকাশ আঘাড়ী।
গত ৫ বছরে মহারাষ্ট্রে যেভাবে রাজনীতির সমীকরণ বদলেছে, এবারের নির্বাচনে কী হবে তা নিয়ে অনেকেরই কৌতূহল। এটাও একটা বড় সাসপেন্স। সে রাজ্যে এবার ২৮৮টি আসনে মহাযুতি এবং মহাবিকাশ আঘাড়ীর মধ্যে জোর টক্কর। এবারের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন আগের নির্বাচনের থেকে আরও নাটকীয় হতে চলেছে। কারণ, এবার শিবসেনার অন্দরে ফাটল। শিন্দে শিবসেনা বনাম উদ্ধব শিবসেনার লড়াইয়েরও সাক্ষী হতে চলেছে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি। আবার, একই রকম চিড় ধরেছে এনসিপিতে। শরদ পাওয়ারের এনসিপি এবং অজিত পাওয়ারের এনসিপি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, কংগ্রেস, বিজেপির মতো দলও লড়াই জারি রেখেছে।
বিজেপির 'বাটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে' স্লোগান নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। অজিত পাওয়ার এই স্লোগান পছন্দ করেননি এবং তিনিই প্রথম এর বিরোধিতা করেছিলেন। একই সঙ্গে বিজেপি নেত্রী পঙ্কজা মুন্ডেও এই স্লোগানের বিরুদ্ধে। সমালোচনার চাপে শেষে বিজেপি আরও একটি স্লোগান তুলে ধরেছে। সেটা হল 'এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়'।
এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেন, 'আমি মোদীকে জবাব দিচ্ছি - যদি ন্যায়বিচার থাকে, তাহলে ভারত নিরাপদ। যদি সংবিধান থাকে, তাহলে সম্মান আছে। আম্বেদকর যদি বেঁচে থাকেন, তাহলে গডসে মৃত।' তিনি আরও বলেন, শিবাজী মহারাজকে অনেকে যতটা সত্য মনে করেন, সেটাই প্রেম। মহারাষ্ট্র নির্বাচনে মারাঠা বনাম ওবিসি করছেন নরেন্দ্র মোদি। আমি ওবিসি ভাইদের বলতে চাই যে আপনারা তাদের ষড়যন্ত্রে না পড়েন, তারা একজনের কথা বলছেন, আমরা অনেকের কথা বলছি। তারা সবাইকে এক নামে যুদ্ধ করতে চায়।
২০১৯ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর কুর্সি দখল ঘিরে মহারাষ্ট্রে যে রাজনীতির খেলা হয়েছে, তা দেশের আর কোথাও দেখা যায়নি। দুই সরকারের পতন, দুই দলে বিভক্ত এবং নতুন দলের উত্থান। ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরে মহারাষ্ট্রে যে ধরনের রাজনীতি হয়েছিল তা এই রাজ্যটিকে চিরতরে বদলে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভোটের ফল কী হবে, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।