জীবিত অবস্থায় নিজের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছিলেন এক ব্যক্তি। লোকজন ডেকে নিজের শ্রাদ্ধ-শান্তি, আচার-অনুষ্ঠান সারিয়েছিলেন। খাইয়েও ছিলেন পাড়া-প্রতিবেশীদের। কিন্তু তারপরের ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল। যা দেখে অবাক গ্রামবাসীরাও।
ঘটনা উত্তরপ্রদেশের ইটার। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জীবিত অবস্থায় সেই ব্যক্তি তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছিলেন। শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে কয়েকশো লোকের সমাগম হয়েছিল। তা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। কিন্তু, এর ঠিক ২ দিন পর সত্যি সত্যিই মারা যান ওই ব্যক্তি। তবে এত তাড়াতাড়ি তিনি যে পৃথিবীকে বিদায় জানাবেন, সেই সময় তা কেউ জানত না। গ্রামবাসীরা এতে বিস্মিত।
ইটার ওই ব্যক্তির নাম হাকিম সিং। গত ১৫ জানুয়ারি নিজেই শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছিলেন। জীবিত অবস্থাতেই নিজের পিন্ডদান করেন। কেন এমন করছেন তার কারণও ব্যাখ্যা করেছিলেন। বলেছিলেন, তিনি পরিবারের সদস্যদের উপর আস্থা হারিয়েছেন। 'আমি জানি না আমার মৃত্যুর পর বাড়ির লোকজন আমার শেষকৃত্য ও আচার অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবেন কি না। তাই আগে ভাগেই করে নিলাম।'
এদিকে এই শ্রাদ্ধ-শান্তির ঠিক ৩ দিন পর হাকিম সিংয়ের মৃত্যু বয়। এখন স্থানীয় বাসিন্দা বলছেন, 'সম্ভবত হাকিম মৃত্যুর পূর্বাভাস পেয়েছিলেন।' পুলিশ জানিয়েছে, হাকিমের মৃত্যু স্বাভাবিক। দেহ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কার্ড বিতরণের মাধ্যমে মৃত্যুভোজের আয়োজন করা হয়
মুন্সিনগর এলাকার বাসিন্দা হাকিম সিং শ্রাদ্ধের জন্য কার্ড ছাপিয়েছিলেন। আমন্ত্রণপত্রও বিতরণ করেছিলেন। প্রায় ৮০০ জন উপস্থিত ছিলেন। বিহারের এক মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন হাকিম সিং। কিন্তু কিছুদিন একসঙ্গে থাকার পর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে নিজ বাড়িতে চলে যায়। হাকিমের কোন সন্তান না থাকায় তার পরিবারের সদস্যরা জমি ও বাড়ি দখল করে নেয়।
হাকিম সিং জানিয়েছিলেন, বাড়ি ও ৫ বিঘা খামারের জন্য তাঁর ভাই-ভাইপোরা প্রায়ই তাঁকে মারধর করত। কয়েকদিন আগে তাঁর হাত ভেঙেও যায়। এমতাবস্থায়, জীবিত অবস্থাতেই তিনি শ্রাদ্ধ শান্তির অনুষ্ঠান করে নেন।