শনিবার মণিপুরের লাঙ্গোল এলাকা নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠেছিল। সেখানকার পরিস্থিতি আজ, রবিবারও শান্ত হয়নি। গতকালের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে ১৫টি বাড়ি। খুন করা হয়েছে একাধিক মানুষকে। তিনজনকে ঘুমন্ত অবস্থায় গুলি করে হত্যা করা হয়। তারপর দেহ কুপিয়ে কেটে ফেলা হয়। শনিবার সকালে পুলিশ জানায়, হামলাকারীরা চুরাচাঁদপুর থেকে এসেছিল। অন্য একটি ঘটনায়, শনিবার সকালে কোয়াকতার কাছে রাষ্ট্রীয় বাহিনী এবং জঙ্গিদের মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময়ের পর একজন পুলিশ-সহ তিনজন আহত হয়েছেন।
আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় আধাসামরিক বাহিনীর আরও দশটি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। "নিরাপত্তা বাহিনী লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের জন্য পাহাড় ও উপত্যকা এলাকায় ক্রমাগত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে," মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে যে তারা এখন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে ১,১৯৫টি লুট করা অস্ত্র উদ্ধার করেছে। শুক্রবার রাতে মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের হাতে তিনজন নিহত হওয়ার একদিন পরেই ওই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর ইম্ফল উপত্যকা জুড়ে মহিলা বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসে এবং যানবাহন চলাচলে বাধা দিতে টায়ার জ্বালিয়ে দেয়। নতুন করে হিংসায় জেলা প্রশাসন ইম্ফলে ১০.৩০ থেকে কারফিউ জারি করে। গত ৩ মে থেকে কুকি এবং মেইতেই জনজাতির সংঘর্ষের কারণে উত্তপ্ত মণিপুর। তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতির দাবি তুলেছেন মেইতেইরা। সেই নিয়েই দুই জনজাতির সংঘর্ষ। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সে কারণে পূর্ব এবং পশ্চিম ইম্ফল জেলায় এখনও জারি থাকবে কারফিউ।
শনিবার ভোর থেকে বিষ্ণুপুর-চুড়াচাঁদপুর সীমানা এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গুলি বিনিময় শুরু হয়। উভয় পক্ষের গুলি ছোড়াছুড়িতে তিন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক বাবা এবং ছেলে রয়েছেন। বিষ্ণুপুর জেলার কাওয়াকটা এলাকার একটি গ্রামে এই ঘটনা হয়েছে। ৩ মে মণিপুরে হিংসা ছড়ানোর পর থেকে ওই গ্রামের বাসিন্দারা আশ্রয় শিবিরে থাকছিলেন। শুক্রবার রাতে কয়েক জন বাসিন্দা নিজেদের গ্রাম পাহারা দেওয়ার জন্য ফিরেছিলেন। শনিবার ভোর থেকে ফের শুরু হয় সংঘর্ষ।