সোমবার লোকসভায় 'ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন' বিল পেশ করবেন আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল। সরকারি সূত্রে খবর, বিলটি জেপিসিতে আলোচনার জন্য পাঠানো হবে। সূত্রের খবর, দীর্ঘ আলোচনা ও ঐকমত্য তৈরির জন্য সরকার এই বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে (JPC) পাঠাবে। জেপিসি সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করবে। এরপর এই প্রস্তাবে সম্মিলিত মতামত জানাবে।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন হয়। এই নতুন নিয়মে দেশে একযোগে সব ভোট করার প্রস্তাব করা রয়েছে। যদিও ইন্ডিয়া ব্লকের দলগুলি, যেমন কংগ্রেস, আপ কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এতে কেন্দ্রের শাসক দল লাভবান হবে। নীতীশ কুমারের জেডি(ইউ) এবং চিরাগ পাসোয়ানের মতো এনডিএ শরীক দলগুলি একসঙ্গে নির্বাচনকে সমর্থন করেছে। 'এক দেশ, এক নির্বাচন'-এর মাধ্যমে দেশে ঘন ঘন ভোট, বাড়তি খরচ ও সময় নষ্ট কমানো যাবে বলে প্রস্তাবে বলা হচ্ছে।
সভাপতি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ
'ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন' নিয়ে পর্যালোচনার জন্য গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির সভাপতি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। কমিটি বলছে, এখনও পর্যন্ত দেশের ৩২টি রাজনৈতিক দল এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে, আর ১৫টি দল এর বিরোধিতা করেছে। উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী স্মরণসভায় বক্তৃতার সময় রামনাথ কোবিন্দ বলেছিলেন, এই ১৫টি বিরোধী দলের মধ্যে অনেকেই এর আগে 'এক দেশ, এক ভোটের' কনসেপ্টকে সমর্থন করেছিলেন।
'এক দেশ, এক ভোট'- রিপোর্ট কীভাবে তৈরি হয়েছিল?
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এজেন্ডা আজ তকের প্ল্যাটফর্মে 'ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন' সম্পর্কিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেন, এই রিপোর্ট তৈরি করতে প্রায় ৬ মাস সময় লেগেছে। আমন্ত্রণ পেতে ৩ মাস সময় লেগেছে। এরপর আমরা যোগাযোগ শুরু করি। ২ মাস ধরে প্রতিদিনের ভিত্তিতে আলোচনা হয়েছে। এই রিপোর্ট ১৮ হাজার পৃষ্ঠারও বেশি। আজ পর্যন্ত ভারত সরকারের কোনও কমিটি এত বড় রিপোর্ট জমা দেয়নি। রিপোর্টটি ২১ খণ্ডে তৈরি করা হয়েছে। এ জন্য আমরা জনসাধারণের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি। এর জন্য ১৬টি ভাষায় শতাধিক বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। ২১,০০০ মানুষের প্রতিক্রিয়া নেওয়া হয়েছে। তাতে ৮০ শতাংশ মানুষ এর পক্ষে ছিলেন। এগুলি ছাড়াও, আমরা প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ফোন করেছিলাম। FICCI, ICC, বার কাউন্সিলের প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়েছিল।
'এই বিল দেশের জন্য একটি গেম চেঞ্জার হতে পারে'
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেন, 'ভারতে নির্বাচন পরিচালনা করতে ৫ থেকে ৫.৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হয়। এই বিল বাস্তবায়িত হলে এক সঙ্গে ভোট পরিচালনা করতে মাত্র ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এতে অনেক সাশ্রয় হবে। বাকি টাকা শিল্প-উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে। সব মিলিয়ে এই বিল কার্যকর হওয়ার পর দেশের জিডিপি আনুমানিক এক থেকে দেড় শতাংশ বাড়তে পারে। ফলে এই ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন ভারতের জন্য গেম চেঞ্জার হতে পারে।'