বুধবার লোকসভার নিরাপত্তা লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়াল বাংলার নাম। সংসদের ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ললিত ঝা বাংলার পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রাম জেলায় এনজিও-র হয়ে কাজ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ললিতই বুধবারের ঘটনার ভিডিও তুলে হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করেন এক সহযোগীকে। সেই সহযোগীর নাম নীলাক্ষ আইচ। তিনি একটি এনজিও চালান। তাঁর মোবাইলেই ভিডিও পাঠান ললিত। যদিও তিনি বর্তমানে পলাতক।
ইন্ডিয়া টুডে-কে নীলাক্ষ আইচ বলেন, 'ললিত আমাকে ফোন করেননি, তবে তিনি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভিডিও পাঠিয়েছিলেন। সংসদের বাইরের রাস্তায় ধোঁয়া স্প্রে ব্যবহার করতে থাকা বিক্ষোভকারীদের ভিডিও। আমি তখন কলেজে ছিলাম, তাই পরে যখন আমি আমার ফোন চেক করি, তখন আমি তাঁকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসা করে রিপ্লাই দিয়েছিলাম।'
তদন্তে এখনও পর্যন্ত উঠে এসেছে তাতে মনে করা হচ্ছে গোটা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন ললিতই। তিনি সমাজকল্যাণ মূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিশেষ করে গ্রাম বাংলায় তিনি কাজ করতেন। ললিত নিজেই তাঁর সহযোগীদের বলেছিলেন যে তিনি গ্রামীণ বাংলায় একটি সক্রিয় নেটওয়ার্ক তৈরি করেছেন, বিশেষ করে পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রাম জেলায়।
নিজেকে সমাজকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন
নীলাক্ষ আইচ ইন্ডিয়া টুডে-কে জানিয়েছেন যে কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল ললিতের। তিনি নিজেকে একজন সমাজকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। এটাও ললিত জানিয়েছিলেন যে তিনি পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য সামাজিক কাজ করতে পছন্দ করেন। তিনি অন্য কোনও বিবরণ দেননি। নীলাক্ষর এনজিও সাম্যবাদী সুভাষ সভার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন ললিত।
ললিতকে কেন এই পদ দেওয়া হয়েছিল জানতে চাইলে আইচ বলেন, 'আমাদের সংগঠনের সদস্যরা বেশিরভাগই কলেজের ছাত্র। প্রায়শই, আমরা ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়ার মতো গ্রামীণ এলাকায় কাজের জন্য যেতে পারি না। ললিত ঝা বলেছিলেন যে তিনি গ্রামীণ বাংলার যে কোনও জেলায় কাজ করতে পারবেন উপস্থিত থেকে।'
সংসদে তাণ্ডব চালানোর কোনও পরিকল্পনা ললিত কি আপনার সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন? উত্তরে নীলাক্ষ জানিয়েছেন যে ললিত কখনও সরাসরি এটির বিষয়ে উল্লেখ করেননি। নীলাক্ষ যদিও বলেন, 'তবে, আমরা ডিসেম্বরে একটি বৈঠকের পরিকল্পনা করেছিলাম এবং সে সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন যে বৈঠকটি ১২ ডিসেম্বরের আগে হওয়া উচিত। ললিতের ঠিকানা এবং বয়স সম্পর্কে সংস্থার কাছে কোনও বিশদ বিবরণ নেই, তবে বয়স ২৫-৩৫-র মধ্যে মনে হয়েছিল। তাঁকে সংগঠনের সদস্যপদ কার্ড দেওয়া হয়নি। ললিত দুটি মোবাইল নম্বরের মধ্যে পরিবর্তন করতেন। যখন তিনি একটি নম্বর ব্যবহার করতেন, অন্য নম্বরটি বন্ধ থাকত।' নীলাক্ষ এটাও জানিয়েছেন যে ললিত একবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন এনজিও-কে কি রাজনৈতিক দল হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করা হবে কি না। তবে ললিতের রাজনৈতিক মতাদর্শ সম্পর্কে অবগত নন।
লোকসভার নিরাপত্তা লঙ্ঘনের মামলায় ললিত ঝা ষষ্ঠ অভিযুক্তদের একজন। সাগর শর্মা, মনোরঞ্জন ডি, নীলম দেবী, অমল নামে আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নীলাক্ষ জানিয়েছেন যে তিনি এই ৪ জনের নাম শোনেননি। তিনি আরও দাবি করেছেন যে শেষবার জুলাই মাসে এনজিও-র অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল ললিতের।