মোগল যুগ, ডারউইনের পর এ বার সিলেবাস বাদ পড়তে চলেছেন উর্দু কবি মহম্মদ ইকবাল। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল শুক্রবার স্নাতক স্তরের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠ্যক্রম থেকে ‘সারে জঁহা সে অচ্ছা, হিন্দুস্থাঁ হামারা’-র স্রষ্টার জীবনী বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত বিশ্ববিদ্যালয়টির পরিচালন পর্ষদ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
মহম্মদ আল্লামা ইকবাল ১৮৭৭ সালে অবিভক্ত ভারতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানানো হয়েছে, 'মডার্ন ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল থট' শিরোনামের অধ্যায়টি ব্যাচেলর অফ আর্টস (বিএ) ষষ্ঠ-সেমিস্টারের পেপারের একটি অংশ ছিল। বিষয়টি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী পরিষদের সামনে উপস্থাপন করা হবে। চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ৯ জুন বৈঠক রয়েছে।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১৪তম একাডেমিক কাউন্সিল সভায় স্নাতক কোর্সের উপর আলোচনার সময় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর যোগেশ সিং বলেছেন, 'যারা ভারত ভাঙার ভিত্তি তৈরি করেছে' তাদের সিলেবাসে থাকা উচিত নয়।
উপাচার্যের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে সংসদে পাস হয়। সভায়, আন্ডারগ্রাজুয়েট কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক (ইউজিসিএফ) ২০২২-এর অধীনে বিভিন্ন কোর্সের চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ সেমিস্টারের সিলেবাসের জন্য রেজুলেশন পাস করা হয়। এই উপলক্ষ্যে উপাচার্য ড. ভীমরাও আম্বেদকর এবং অন্যান্যদের শেখানোর উপর জোর দেন।
একাডেমিক কাউন্সিলের একজন সদস্য বলেন, "রাজনীতি বিজ্ঞানের সিলেবাসে পরিবর্তনের বিষয়ে একটি প্রস্তাব আনা হয়েছিল। প্রস্তাব অনুযায়ী, ইকবালের একটি অধ্যায় ছিল, যা সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।"
অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (ABVP) এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাঁদের মতে, ধর্মান্ধ ধর্মতাত্ত্বিক পণ্ডিত ইকবাল ভারত ভাগের জন্য দায়ী।
উল্লেখ্য, এর আগেই পাঠ্যক্রম থেকে বাদ গিয়েছে ডারউইনের মতবাদ ও মোঘল যুগ। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি) এপ্রিল মাসে পাঠ্যপুস্তকগুলি সংশোধন করেছে। যার মধ্যে ক্লাস টুয়েলভের ইতিহাস বই থেকে মোঘল যুগ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দশম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকের যৌক্তিক বিষয়বস্তুর তালিকায় NCERT দ্বারা প্রকাশিত একটি নথি অনুসারে, অধ্যায়: ৯'বংশগতি এবং বিবর্তন'কে 'বংশগতি' দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে। বাদ পড়া অধ্যায়গুলির তালিকার মধ্যে রয়েছে চার্লস রবার্ট ডারউইন, পৃথিবীতে জীবনের উৎপত্তি, মলিকুলার ফাইলোজেনি, বিবর্তন, বিবর্তনীয় সম্পর্ক এবং মানব বিবর্তনের সন্ধান করা।