ভারতের বিভিন্ন শহরের বায়ুর গুণমান পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, রাজধানী দিল্লি ব্যাপক দূষণে ভুগছে। দীপাবলির পর থেকে দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) ৩০০-এর নীচে নামছে না, যা ‘অত্যন্ত খারাপ’ বিভাগে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে এটি প্রায় ৩৫০-এর আশেপাশে রয়েছে। দিল্লির এই গুরুতর পরিস্থিতি শহরের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য এবং প্রশাসনের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতের পরিষ্কার শহরগুলো
অন্যদিকে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শহরগুলো পরিষ্কার বাতাসের জন্য পরিচিত। এর মধ্যে সিকিমের গ্যাংটক সবচেয়ে পরিষ্কার রাজধানী হিসেবে উল্লেখযোগ্য। সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (CPCB)-এর ৬ নভেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, গ্যাংটকের AQI মাত্র ২৯, যা পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর। গ্যাংটকে প্রধান দূষণকারী ওজোন, যেখানে দিল্লিতে সমস্যা মূলত কণাপদার্থজনিত।
মিজোরামের রাজধানী আইজলও একইভাবে ভালো অবস্থানে রয়েছে। ৬ নভেম্বর আইজলের AQI ছিল ৩৪। যদিও এখানে প্রধান দূষণকারী PM10, তবে উত্তর ভারতের শহরগুলোর মতো এর পরিস্থিতি নয়।
দক্ষিণ ভারতের বায়ুর মান ভালো অবস্থানে
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলোও পরিষ্কার বাতাসের জন্য উল্লেখযোগ্য। কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোর শহরের AQI ৩২, যা দক্ষিণ ভারতের মধ্যে সর্বোত্তম। ম্যাঙ্গালোরে প্রধান দূষণকারী কার্বন মনোক্সাইড, কণাপদার্থ নয়। তবে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে AQI ১১০, যা ‘মধ্যম’ মানে পড়ে। এখানকার দূষণের কারণ হিসেবে পরিবহন থেকে নির্গত ধোঁয়া এবং ধূলিকণার উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যান্য দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর যেমন উদুপি (৪৫), তিরুনেলভেলি (৩৫), ত্রিশুর (৪৬), থুথুকুডি (৪৬), কোলার (৪০), কোল্লাম (৪৮), কালাবুর্গি (৪১) এবং চামরাজানগর (৪০)-এর AQI ভালো অবস্থায় রয়েছে।
তবে যে শহরগুলিতে দূষণ কম, সেই তালিকায় ঠাঁই হয়নি কলকাতার। কলকাতার দূষণ দিন দিন বাড়ছে বলে অভিযোগ করছেন পরিবেশবিদরা। এবছর কালীপুজো ও দীপাবলিতেও দেদার বাজি ফেটেছে কলকাতা সংলগ্ন শহরতলিতে। রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও দেদার শব্দবাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ।
ভৌগোলিক এবং স্থানীয় ব্যবস্থাপনার ভূমিকা
একটি শহরের বায়ুর গুণমান তার ভৌগোলিক এবং আবহাওয়ার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। তবে স্থানীয় পর্যায়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন উত্তর-পূর্ব ভারত এবং দক্ষিণ ভারতের কিছু শহরে স্থানীয় প্রশাসন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থাগুলো সাফল্যের সঙ্গে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করেছে।
দিল্লির মতো শহরগুলোতে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন। একই সঙ্গে কলকাতা এবং মুম্বাইয়ের মতো শহরগুলোতেও দূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।