scorecardresearch
 

Modi in Loksabha: 'সব কিছুই বাবু করবে নাকি?' বেসরকারিকরণ ইস্যুতে বিরোধীদের জবাব মোদীর

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তার সরকার একের পর এক সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণ করে চলেছে, এমন একটা অভিযোগ রয়েছে। চলতি বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সাফ জানিয়ে দিয়েছে আইডিবিআই ব্যাঙ্ক ছাড়াও দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং একটি সাধারণ বিমা সংস্থার বেসরকারিকরণ করা হবে। বুধবার লোকসায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোদিবেন্দর ভাষণের উপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাবে ফের একবার বেসরকারিকরণের হয়ে সওয়াল করলেন।

Advertisement
নরেন্দ্র মোদী নরেন্দ্র মোদী
হাইলাইটস
  • সোমবার সংসদে আন্দোলনজীবীদের কথা বলেছিলেন মোদী
  • এদিন লোকসভার ভাষণেও টানলেন সেই প্রসঙ্গ
  • সেই সঙ্গে 'বাবু' কালচার নিয়ে এবার মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তার সরকার একের পর এক সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণ করে চলেছে, এমন একটা অভিযোগ রয়েছে। চলতি বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সাফ জানিয়ে দিয়েছে আইডিবিআই ব্যাঙ্ক  ছাড়াও দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং একটি সাধারণ বিমা সংস্থার বেসরকারিকরণ করা হবে।  বুধবার লোকসায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোদিবেন্দর ভাষণের উপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাবে ফের একবার বেসরকারিকরণের হয়ে সওয়াল করলেন। সম্পদ তৈরি দেশের জন্য অপরিহার্য।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের শক্তি বাড়াতে সবার সম্মিলিত অবদান রয়েছে। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, কচ্ছ থেকে কামাখ্যা সব প্রান্তের ভারতীয়ই ঘাম ঝড়িয়ে কাজ করছে।  দেশ এগিয়ে চলেছে, আমি কংগ্রেস সহকর্মীদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে যদি দেশের জন্য সরকারী খাত জরুরি হয় তবে বেসরকারী খাতের অংশগ্রহণও সমান গুরুত্বপূর্ণ। 

বারবার নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কয়েকজন পুঁজিপতি ‘বন্ধু’-র স্বার্থ রক্ষার অভিযোগ উঠে থাকে।  কৃষি আইন থেকে রাষ্ট্রয়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ - সবক্ষেত্রেই বিরোধীদের অভিযোগ, কয়েকজন পুঁজিপতিকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই আমজনতার পরোয়া করে না মোদী সরকার। সেই অস্ত্র ঘায়েল করতে বুধবার  নিজেই আসরে নেমেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। লোকসভায় স্পষ্ট তজানান , দেশের উন্নয়নে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ভূমিকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই বেসরকারি সংস্থাগুলির ভূমিকা কোনওমতেই অস্বীকার করা যাবে না। কৃষি  আইন নিয়ে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, বাম-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, নিজের ‘বন্ধু’-দের জন্যই নতুন ৩টি  আইন নিয়ে এসেছে মোদী সরকার। বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ করছে। সেই অভিযোগ দেশের জনমানসের একাংশেও প্রভাব ফেলেছে। সরাসরি সেই অভিযোগের জবাব না দিলেও মোদী বুঝিয়ে দেন, দেশের স্বার্থেই বেসরকারি ক্ষেত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘আমি কংগ্রেসের সতীর্থদের মনে করিয়ে দিতে চাই, দেশের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে বেসরকারি ক্ষেত্রের ভূমিকাও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ।’ মোবাইলে বেসরকারি শিল্পপতিদের লগ্নি, বেসরকারি সংস্থার হাত ধরে করোনাভাইরাস টিকা উৎপাদনের মতো বিষয়গুলি তুলে ধরে মোদী বলেন, ‘আমাদের কৃষিশিল্প, আমাদের টিকা প্রস্তুতকারক - তারা কি সব সরকারি নাকি? আজ ভারত যে মানবতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, তাতে বেসরকারি ক্ষেত্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

Advertisement

বিরোধীদের আক্রমণ ভোঁতা করতে দেশের যুবপ্রজন্মের দক্ষতার পক্ষেও সওয়াল করেন মোদী। বলেন, 'আমাদের দেশের যুবপ্রজন্মের উপর ভরসা রাখতে হবে। মোদীর কথায়  আজ পৃথিবী পাল্টে গিয়েছে। সমাজ শক্তিশালী হয়েছে। দেশের মধ্যে সামর্থ্য আছে।' সেইসঙ্গে যোগ করেন, 'ওদের সুযোগ পাওয়া উচিত। তাদের বেইমান বলা, কুকথা প্রয়োগ করা - কোনও জমানায় ভোট পাওয়ার জন্য সেই সংস্কৃতি হয়তো কাজে এসেছে, কিন্তু আজ তা কাজে দেবে না। দয়া করে এরকম করবেন না। দেশের জন্য যাঁরা সম্পদ তৈরি করেন, তাঁরা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবেই তো গরিবদের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টন করা হবে। নাহলে সম্পদ দেওয়া হবে কীভাবে? তাঁদের চাকরি রোজগার দেওয়া হবে কীভাবে? সবকিছু কি বাবুরাই করবেন? আইএএস হয়ে গিয়েছেন মানেই সারের কারখনা চালাবেন, আইএএস হয়ে গিয়েছেন মানে রাসায়নিকের কারখানা চালাবেন, আইএএস হয়ে গিয়েছেন মানে উড়োজাহাজ ওড়াবেন? এটা কোন ধরনের শক্তির আখড়া করে রেখেছি আমরা? বাবুদের হাতে দেশ তুলে দিয়ে আমরা কী করব? আমাদের বাবুরাও তো দেশের, যুবপ্রজন্মও তো আমাদের দেশের। আমার মনে হয়, আমাদের যুবপ্রজন্মের সুযোগ পাওয়া উচিত।

সম্প্রতি কৃষক আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে ‘‌আন্দোলনজীবী’‌,‘‌পরজীবী’‌ শব্দ ব্যবহার করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদি। এদিন ফের ‘‌আন্দোলনজীবী’ জাতীয় শব্দের ব্যবহার শোনা গেল প্রধানমন্ত্রীর মুখে। বলেন, ‘‌কৃষক আন্দোলনকে আমি পবিত্র মনে করি। আন্দোলনজীবীরা পবিত্র আন্দোলনে ঢুকে পড়লে কী হয় দেখেছেন!‌ টোল প্লাজায় ভাঙচুর চালানো কি পবিত্র আন্দোলন? আন্দোলনজীবীদের থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে।‌’‌ কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে মোদী এদিন বলেন, ‘‌কংগ্রেস দলে এতটাই বিভেদ, বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যসভা ও লোকসভার সাংসদরা ভিন্ন অবস্থান নেন। পরিকল্পনা করেই এঁরা সভা ভঙ্গ করতে চাইছে।’‌ এরপর প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালীনই কংগ্রেস এবং তৃণমূলের বেশ কয়েকজন সাংসদ ওয়াকআউট করেন। তার পরও নাম না করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘‌যতই বাধা দেওয়ার চেষ্টা হোক না কেন, লাভ নেই। সত্যি সামনে এসে গেছে।’‌ 

 

Advertisement