scorecardresearch
 

Rahul Gandhi: লোকপাল থেকে CBI কর্তা নিয়োগ, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই বসবেন রাহুল, কী কী সুবিধা পাবেন?

আড়াই দশকের বেশি রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথম সাংবিধানিক পদে দায়িত্ব দিলেন রাহুল। তিনি পঞ্চমবারের সাংসদ। মঙ্গলবার তিনি সংবিধানের কপি হাতে নিয়ে সাংসদ হিসেবে শপথও নেন।

Advertisement
রাহুল গান্ধী রাহুল গান্ধী
হাইলাইটস
  • লোকসভায় বিরোধী দলনেতা মানে পূর্ণমন্ত্রী।
  • আড়াই দশকের বেশি রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথম সাংবিধানিক পদে দায়িত্ব দিলেন রাহুল।

লোকসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলির সাংসদ রাহুল গান্ধীর নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। মঙ্গলবার রাতে ইন্ডিয়া মঞ্চের বৈঠকে রাহুলকে বিরোধী দলনেতা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার কংগ্রেসের সংসদীয় বোর্ডের চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধী প্রোটেম স্পিকার ভর্ত্রিহরি মাহতাবকে চিঠি লিখে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। স্পিকার হিসেবে ওম বিড়লার নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার যোগ দিলেন রাহুল গান্ধী। ওম বিড়লাকে অভিনন্দন জানাতে গিয়ে হাত মেলালেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও। লোকসভায় বিরোধী দলনেতা মানে পূর্ণমন্ত্রীর সমতুল পদ। আগামী দিনে ইন্ডিয়া জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ হওয়ার ক্ষেত্রেও রাহুলের এই নতুন ভূমিকা তাঁকে এগিয়ে রাখবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। আড়াই দশকের বেশি রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথম সাংবিধানিক পদে দায়িত্ব দিলেন রাহুল। তিনি পঞ্চমবারের সাংসদ। মঙ্গলবার তিনি সংবিধানের কপি হাতে নিয়ে সাংসদ হিসেবে শপথও নেন।

এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাহুল কেরলের ওয়েনাড এবং উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি থেকে জিতেছেন রাহুল। ওয়েনাড় আসন থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এখন ওয়েনাডে উপনির্বাচন হবে। রাহুলের বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা ওই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ২০০৪ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন রাহুল গান্ধী। উত্তরপ্রদেশের আমেঠি থেকে প্রথমবারের মতো জয়ী হন। তিনি আমেঠি থেকে তিনবার নির্বাচনে জিতেছেন। ২০১৯ সালে ওয়েনাড থেকে জেতেন।

রাহুলের ক্ষমতা

আরও পড়ুন

- পূর্ণমন্ত্রীর সমতুল পদ বিরোধী দলনেতা
- সরকারি সজ্জিত বাংলো 
- সচিবালয়ে অফিস 
- উচ্চ স্তরের নিরাপত্তা
 -বিনামূল্যে বিমান ভ্রমণ 
- বিনামূল্যে রেল ভ্রমণ 
- সরকারি গাড়ি ব্যবহার এবং ভাতা 
- ৩.৩০ লক্ষ টাকা মাসিক বেতন এবং ভাতা 
- প্রতি মাসে আতিথেয়তা ভাতা 
- প্রতি বছর দেশের মধ্যে ৪৮টিরও বেশি ভ্রমণের জন্য ভাতা 
- টেলিফোন বিল এবং চিকিৎসা সুবিধা 

Advertisement

রাহুলের বড় ভূমিকা

ভারতীয় সংবিধানে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিরোধী দলের নেতাদের আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সাংবিধানিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও রাহুল গান্ধীর ভূমিকা থাকবে। বিরোধী দলের নেতা হিসাবে রাহুল গান্ধী লোকপাল, সিবিআই অধিকর্তা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার, কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনার, কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার এবং এনএইচআরসি প্রধান নিয়োগের মতো বিষয়ে তাঁর মতামত গুরুত্ব পাবে। এই প্যানেলের সদস্য হিসেবে যোগ দেবেন। 

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অংশগ্রহণ 

গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিরোধী দলনেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই বসবেন রাহুল। এই নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রীকেও বিরোধী দলের নেতা হিসেবে রাহুল গান্ধীর সম্মতি নিতে হবে। তাঁর মতামত এবং পরামর্শ শোনা হবে। 

সরকারি কমিটিগুলিতে রাহুল 

সরকারের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলি পর্যালোচনা করতে পারবেন রাহুল। সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্যও করবেন। 'পাবলিক অ্যাকাউন্টস' কমিটির প্রধানও হবেন। যে কমিটি সরকারের সমস্ত ব্যয় পরীক্ষা এবং পর্যালোচনা করে । রাহুল গান্ধী সংসদের প্রধান কমিটিগুলিতেও বিরোধী দলনেতা হিসেবে যোগদান করতে পারবেন। সরকারের কাজকর্ম পর্যালোচনা করার অধিকার তাঁর থাকবে।

বিরোধী  দলনেতার কাজ কী

সংসদীয় গণতন্ত্র লোকসভার বিরোধী দলের নেতার কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিরোধী দল একটি গণতান্ত্রিক সরকারের অপরিহার্য অঙ্গ। বিরোধী দলের কাছ থেকে ইতিবাচক সমালোচনা গণতন্ত্রকে সঠিক দিশা দেখায়। তাই সংসদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিরোধী দল বললে এতটুকুও অত্যুক্তি হবে না। ক্ষমতাসীন দল সরকার চালায় আর বিরোধীরা সমালোচনা করে। সুতরাং উভয়েরই কর্তব্য ও অধিকার রয়েছে। সরকার ও মন্ত্রীদের আক্রমণ করা বিরোধী দলের কাজ। এর মধ্যে একটি কাজ হল,বিরোধীদের উচিত ত্রুটিপূর্ণ প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং এর তীব্র বিরোধিতা করা। সরকার ও বিরোধী দল ঐক্যমতের সঙ্গে কাজ করে। পারস্পরিক সহযোগিতার অভাব থাকলে সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়।


রাহুলের নিয়োগ নিয়ে যা বলল কংগ্রেস... 

মঙ্গলবার রাতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাসভবনে ইন্ডিয়া মঞ্চের নেতাদের একটি বৈঠক হয়। ওইই বৈঠকে রাহুল গান্ধীকে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এআইসিসি সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল বলেছেন যে সিপিপি চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধী কংগ্রেস দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রোটেম স্পিকারের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন। কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে বলেছেন, রাহুল গান্ধী মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবেন। রাহুল কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর এবং মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্র পর্যন্ত গোটা দেশে সফর করেছেন। 

কংগ্রেস দ্বিতীয় বৃহত্তম দল

১০ বছর কংগ্রেস বিরোধী নেতার পদ পেয়েছে। ৯৯ জন সাংসদ হয়েছেন। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে কংগ্রেসের কাছে বিরোধী নেতার পদ পাওয়ার মতো প্রয়োজনীয় আসন ছিল না। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এবার কংগ্রেসের আসন সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৯ সালে কংগ্রেস ৫২টি আসন জিতেছিল। এবার জিতেছে ৯৯টি আসন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস মাত্র ৪৪টি আসনে জয়ী হয়েছিল।

Advertisement