'প্রধানমন্ত্রী মোদী ইভিএম ছাড়া নির্বাচনে জিততে পারবেন না,' দাবি রাহুল গান্ধীর। রবিবার কংগ্রেস নেতা বলেন, 'রাজার আত্মা ইভিএমে (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন)'। মুম্বইয়ের এক জনসভায় ভাষণের সময়ে এমনটা বলেন তিনি।
'হিন্দুধর্মে 'শক্তি' শব্দটি রয়েছে। আমরা একটি শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। প্রশ্ন হল, সেই শক্তিটা কী? রাজার আত্মা ইভিএম-এ। এটাই সত্য। দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে, ইডি, সিবিআই এবং আয়কর বিভাগে...' বলেন রাহুল গান্ধী।
তিনি আরও বলেন, 'ইভিএম ছাড়া নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনে জিততে পারবেন না। আমরা নির্বাচন কমিশনকে আমাদের ইভিএম মেশিন দেখাতে এবং আমাদের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করানোর অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা সেটা প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমরা মেশিনটি এবং সেখান থেকে যে কাগজ বের হয় তার সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করেছিলাম। কিন্তু তারা সেই কাগজ দিতেও অস্বীকার করেছে।'
লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী দলগুলি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তাদের দাবি, বিজেপি ইভিএম-এ কারচুপি করতে পারে। আর তার ফলে তাদের জয়ের সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে।
মুম্বইয়ের সমাবেশে অন্যান্য সিনিয়র কংগ্রেস নেতারাও ইভিএম নিয়ে আপত্তির কথা জানান। তাঁরা এটাও বলেন যে, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে তারা ইভিএম মেশিন বন্ধ করে দেবে।
রাহুল গান্ধী বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে 'এজেন্সির অপব্যবহার' করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনাও করেন। এমনকি তিনি অভিযোগ তোলেন, বিজেপির প্রয়াত অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি একবার বলেছিলেন, তিনি জমি অধিগ্রহণের কথা বললে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
'পুরো সিস্টেমটাই তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। তাদের সরকার যখন প্রথমবার ক্ষমতায় আসে, তখন অরুণ জেটলি আমার কাছে এসে বলেছিলেন, 'জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে কোনও কথা বলবেন না।' আমি জিজ্ঞাসা করলাম কেন? তিনি বলেছিলেন আমি যদি এই নিয়ে কথা বলি, তাহলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে,' বলেন রাহুল গান্ধী।
তিনি আরও বলেন, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তাঁকে ৫০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। সেই সময় একজন অফিসার তাঁকে বলেছিলেন, 'আপনি কাউকে ভয় পান না, আপনিই নরেন্দ্র মোদীকে হারাতে পারেন।'
কংগ্রেস ছেড়ে যাওয়া নেতাদের বিষয়েও মুখ খোলেন রাহুল। তাঁর দাবি, এই নেতারা বিজেপির হুমকির মুখে পড়েছিল। সেই কারণেই দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। ওই নেতারা সেই বিষয়ে সোনিয়া গান্ধীকে জানিয়েছিলেন বলেও দাবি রাহুলের।
'মহারাষ্ট্রের অনেক বড় নেতা কংগ্রেস ছেড়েছেন। ওঁরা কাঁদতে কাঁদতে আমার মায়ের কাছে বলেছিল, 'সোনিয়া জি, আমি লজ্জিত, আমি ওদের সঙ্গে লড়াই করে জেলে যেতে পারছি না।' এই ধরনের অনেককেই হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঠিক যেমন শিবসেনা এবং এনসিপির নেতারা চলে গিয়েছেন। ওঁরা সবাই চলে গিয়েছেন, কারণ ওঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল,' বলেন ওয়েনাড এমপি।
মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে কংগ্রেসের সমাবেশের মাধ্যমেই এদিন ন্যায় যাত্রা শেষ করেন রাহুল গান্ধী। গত ১৪ জানুয়ারি সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত মণিপুর থেকে ন্যায় যাত্রা শুরু হয়েছিল।