লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর একাধিক মন্তব্যে তোলপাড় শুরু হল সোমবার। কিছু মন্তব্যের জেরে উত্তাল হল লোকসভা। এদিন রাহুল শাসক জোটের সাংসদদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'যাঁরা নিজেদের হিন্দু বলেন, তাঁরা কেবল হিংসার কথা বলেন, ঘৃণার কথা এবং অসত্য কথা বলেন।' এরপরই উত্তেজনা তৈরি হয় সংসদে। এমনকি রাহুলের বক্তব্যের মাঝেই নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'গোটা হিন্দু সম্প্রদায়কে হিংসাশ্রয়ী বলে দেগে দেওয়া খুবই বিপজ্জনক।'
সেইসঙ্গে, রাহুল গান্ধী বলেন যে, 'রামের জন্মস্থান অযোধ্যা বিজেপিকে একটি বার্তা দিয়েছে।' অবধেশ প্রসাদের দিকে ইশারা করে রাহুল বলেন, 'ওই বার্তা আপনার সামনে বসে আছে। গতকাল কফি খাওয়ার সময় আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি কখন জানলেন যে, আপনি অযোধ্যায় জিতেছেন? তিনি বলেন, প্রথম দিন থেকেই জেনেছি। অযোধ্যায় বিমানবন্দর তৈরি হয়েছে, জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং আজ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়নি। সমস্ত ছোট দোকানদারদের দোকান এবং ছোট ছোট বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে।'
মন্দির উদ্বোধনের সময় অযোধ্যার মানুষ খুবই দুঃখ পেয়েছিলেন। আম্বানি ছিলেন, আদানি ছিলেন, কিন্তু অযোধ্যার কেউ ছিলেন না। নরেন্দ্র মোদী অযোধ্যার মানুষের মনে ভয় জাগিয়েছিলেন। তাদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। তিনি আমাকে আরও একটি কথা বলেছিলেন যে, দু'বার নরেন্দ্র মোদী অযোধ্যায় লড়তে চেয়েছিলেন। সমীক্ষা করান। তাঁকে বলা হয়, অযোধ্যায় যাবেন না, সেখানকার মানুষ আপনাকে হারাবে। এই কারণেই প্রধানমন্ত্রী বারাণসী গিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান।'
রাহুল এদিন আরও বলেন, 'একদিন মোদিজী তার ভাষণে বলেছিলেন যে, ভারত কখনো কাউকে আক্রমণ করেনি। এর কারণ আছে। ভারত অহিংসার দেশ, ভয় পায় না। আমাদের মহাপুরুষরা এই বার্তা দিয়েছিলেন- ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না। শিবজি বলেন, ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না এবং মাটিতে ত্রিশূল পুঁতে দাও। অন্যদিকে যারা নিজেদেরকে হিন্দু বলে, তারা চব্বিশ ঘণ্টা হিংসা-হিংসা-হানাহানি, ঘৃণা-বিদ্বেষে লিপ্ত থাকে। আপনি মোটেও হিন্দু নন। হিন্দু ধর্মে স্পষ্টভাবে লেখা আছে যে, সত্যকে সমর্থন করা উচিত। বিজেপি ভয় ছড়াচ্ছে।'