নাগাড়ে বৃষ্টির কারণে লখনউয়ের বিভিন্ন এলাকায় জলমগ্ন পরিস্থিতি। হাঁটুর উপরে জল জমেছে বহু রাস্তায়। বহু এলাকা ভেসে গেছে। এই অবস্থায় এক চাঞ্চল্যকর দৃশ্য দেখা গেছে, যা ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, জলমগ্ন রাস্তায় এক যুবক বাইক চালাচ্ছেন এবং তাঁর পেছনে এক যুবতী বসে আছে। হঠাৎ একদল যুবক তাদের দিকে জল ছেটাতে শুরু করে এবং একজন ব্যক্তি বাইকে বসা যুবতীকে টেনে নামিয়ে শ্লীলতাহানি করে। টানা হিঁচড়ানোর ফলে যুবতীটি বাইক থেকে পড়ে যায় এবং বাইক আরোহীও জলে পড়ে যায়।
ঘটনাটি পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসার পর, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে পুলিশ অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ঘটনার পর পুলিশের গাফিলতির কারণে স্থানীয় অতিরিক্ত-পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, সহকারী উপ-পুলিশ কমিশনারকে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। এছাড়াও স্থানীয় স্টেশন হাউস অফিসার, পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এবং ফাঁড়িতে উপস্থিত সমস্ত পুলিশ কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার লখনউয়ের তাজ হোটেল ব্রিজের নীচে এ ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত মোট চারজনকে আটক করা হয়েছে। একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে, এবং অভিযুক্তদের সনাক্ত করতে তিনটি পুলিশ দল গঠন করা হয়েছে।
লখনউয়ের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে গোমতি নদীর কারণে। বর্ষায় নদীর প্রবাহ থেকে শহরকে রক্ষা করার জন্য উঁচু বাঁধ দেওয়া থাকলেও, সরাসরি শহরের জমা জল নদীতে যেতে সমস্যা হচ্ছে। টানা বৃষ্টির জেরে শহরের উঁচু এলাকাগুলিতেও জল জমেছে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
জলমগ্ন পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, লখনউ বিধানসভার মধ্যে হাঁটু সমান জল ঢুকে গিয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, কর্মকর্তারা জলমগ্ন বিধানসভা থেকে বের হচ্ছেন। বর্তমানে বাজেট অধিবেশন চললেও, জলাবদ্ধতার কারণে বিধায়ক এবং কর্মচারীরা সমস্যায় পড়েছেন। বিধানসভার নিচতলা থইথই করছে জলে, এমনকি ৭ নম্বর গেটের সামনে জল থাকায় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারেননি, তাঁকে অন্য গেট দিয়ে ঢুকতে হয়েছে।
এই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সরকার কয়েকশো বালতি কিনেছে এবং বালতিতে করে অফিস এবং ঘরের জমা জল সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। লখনউতে এমন বৃষ্টিপাতের নজির খুবই কম, কিন্তু শহরের নিকাশি ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।