Sikkiim Disaster Continues: বৃষ্টি ধসে নাজেহাল সিকিম। তিনদিন পরেও সিকিমের সামগ্রিক পরিস্থিতির কোনও উন্নতি তো ঘটেইনি বরং টানা বৃষ্টিতে নতুন করে ধস নেমেছে কয়েকটি জায়গায়। রবিবার নতুন করে শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কয়েক জায়গায় চলাচলের যোগ্য রাস্তাও অবশিষ্ট নেই। সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় আটতে রয়েছে কয়েক হাজার পর্যটক।
শনিবার রাত থেকে পাহাড়ি রাস্তায় নতুন করে একের পর এক ধসের খবর মিলেছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সহ সিকিমের একাধিক জায়গায়। সিকিম সহ দার্জিলিং, কালিম্পং, ডুয়ার্স অঞ্চলে বৃষ্টি কমার নামই নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় সিকিমে ১৯৪ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। ফলে থমকে রয়েছে উদ্ধারকাজ।
রবিবার সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। অবিরাম বৃষ্টি হয়ে চলেছে সিকিমে। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিতে হয়েছে সিকিমের ‘লাইফলাইন’ হিসাবে পরিচিত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কও। সড়কপথ ধস ও চলাচলের রাস্তা ধসে যাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারে পর্যটকদের উদ্ধার করার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু রবিবার খারাপ আবহাওয়ার কারণে পর্যটকদের নিরাপদ জায়গায় তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে। বিকল্প হিসাবে যে সড়কপথে পর্যটকদের নামিয়ে আনার কথা ভাবা হয়েছিল, তাও আপাতত হচ্ছে না। ফলে, আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন আটকে থাকা পর্যটকরা। আবহাওয়া অনুকুলে না আসা পর্যন্ত কোনওভাবেই কপ্টারে উদ্ধারকার্য চালানো সম্ভব হবে না বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। পর্যটকরা মূলত আটকে আছেন উত্তর সিকিমের লাচুং, চুংথাম, জঙ্গুতে।
সোমবার বৃষ্টি কমলে এবং পরিস্থিতির একটু উন্নতি হলে নতুন করে উদ্ধারকাজ আরম্ভ করা হবে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পর্যটকদের উদ্ধার করা হবে। তবে এই পরিকল্পনা ভেস্তে গেলে, সোমবার উত্তর সিকিমের বিপদসংকুল পথ টুং থেকে পাঁচ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা পর্যটকদের পায়ে হেঁটে পেরোতে হবে। টুং থেকে মঙ্গন পর্যন্ত ধস পেরিয়ে সেখান থেকে পর্যটন সংস্থার গাড়িতে তাঁরা গ্যাংটকের উদ্দেশে রওনা দেবেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৪ মিমি বৃষ্টি হয়েছে সিকিমে। আর তার জেরে পাহাড়ের গায়ে ভাঙা বাড়ি থেকে বড় গাছ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এমনকী রাস্তাঘাটে ধস নামার জেরে বুকে আতঙ্ক নিয়ে আটকে আছেন পর্যটকরা। তিস্তার গর্জনে ভয় পাচ্ছেন সকলেই। উত্তর সিকিমে একাধিক ধস নামার জেরে এখন দু’হাজার পর্যটক সেখানে আটকে রয়েছে। অত্যন্ত খারাপ আবহাওয়ার জেরে উদ্ধারকাজ পর্যন্ত করা যাচ্ছে না। পর্যটকরা নিরাপদ আশ্রয়ে আছে জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তিনদিন হয়ে গেল সেখানে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও) ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলি সারাইয়ের কাজে হাত লাগিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তর সিকিমের ডিকচু-সাংক্লাং-টুং, মাঙ্গান-সাঙ্কলাং, সিংথাম-রাংরাং এবং রংরাং-টুং রাস্তায় ধস নেমেছে। এছাড়াও এই রাস্তাগুলিতে অনেক জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে। সাংক্লাং-এ একটি নবনির্মিত ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে। টুং থেকে সাংক্লাং পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা পরিষ্কার করেছে বিআরও।