দেশের বিবাহিত মহিলাদের অধিকার নিয়ে সরব সুপ্রিম কোর্ট। যে মহিলা রোজগার করেন না বা যাঁদের অর্থনৈতিক সামর্থ্য নেই, তাঁদের আর্থিকভাবে সক্ষম করার দায়িত্ব পুরুষের। পর্যবেক্ষণ দেশের শীর্ষ আদালতের।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং অগাস্টিন জর্জ ম্যাসির বেঞ্চে মহম্মদ আবদুস সামাদ নামের এক মুসলিম পুরুষের মামলার শুনানি চলছিল। সেখানেই মহিলাদের অধিকার নিয়ে সরব হন বিচারপতিরা।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, একজন ভারতীয় মহিলা কোনওকিছু পাওয়ার আশা না করে দিনরাত বাড়ির কাজ করেন। বিচারপতিরা বলেন, 'একজন বিবাহিত পুরুষ তাঁর স্ত্রীর অধিকার নিয়ে সচেতন হবেন। যদি কোনও মহিলার আয়ের উৎস না থাকে তার দায়িত্ব স্বামীর নেওয়া উচিত। স্বামীকেই দেখতে হবে, যেন তাঁর স্ত্রী আর্থিকভাবে স্বচ্ছ্বল থাকেন।'
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, বাড়িতে মহিলাদের আর্থিক ক্ষমতা দিলে পরিবারেরই উন্নতি হবে। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, 'যে পুরুষরা মহিলাদের অধিকার নিয়ে সচেতন এবং অর্থনৈতিক অবস্থার গুরুত্ব বোঝেন, তাঁদের স্ত্রী-র জন্য জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা বা এটিএম কার্ড ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত। বাড়ির দৈনন্দিন খরচের বাইরে মহিলাদের হাত খরচের টাকা দেওয়া উচিত।'
প্রসঙ্গত, আবদুল সামাদ নামে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে খোরপোশ দেওয়ার জন্য তেলাঙ্গানা হাইকোর্টের আদেশকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। ওই ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিয়েছিলেন, একজন তালাকপ্রাপ্ত মুসলিম মহিলা সিআরপিসির 125 ধারায় আবেদন করার অধিকারী নন। মহিলাকে মুসলিম মহিলা আইন, ১৯৮৬-এর বিধানগুলি অনুসরণ করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে, আদালতের সামনে প্রশ্ন ছিল যে এই ক্ষেত্রে মুসলিম মহিলা আইন, ১৯৮৬ কে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত নাকি সিআরপিসির 125 ধারাকে।
সেই মামলার শুনানিতে দেশের শীর্ষ আদালত জানায়, কোনও মুসলিম তালাকপ্রাপ্ত মহিলা তাঁর স্বামীর কাছ থেকে খোরপোশের জন্য CrPC এর 125 ধারায় আবেদন করতে পারেন। বিচারপতি বিবি নাগারথনা এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহ রায় দেওয়ার সময় বলেন, মুসলিম মহিলারা খোরপোশের জন্য তাঁদের আইনি অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির 125 ধারার অধীনে এই সম্পর্কিত একটি পিটিশন দায়ের করতে পারেন।