নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারার বৈধতা নিয়ে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ধারার বৈধতা বহাল রাখল শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় শুনানিতে জানান, এই ৬-এ ধারা তাদের নাগরিকত্ব প্রদান করে যারা সাংবিধানিক বিধিনিষেধের আওতায় নেই।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, অসমে অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করতে হবে। অসমের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল NRC নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা যেন কার্যকর করা হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে এই গোটা প্রক্রিয়াটি সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে সম্পন্ন হবে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতিরা।
আসলে অসম চুক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ১৯৮৫ সালে সংশোধনীর পর নাগরিকত্ব আইনের ধারা ৬-এ যুক্ত করা হয়। এই চুক্তির অধীনে ভারতে আসা লোকেদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য নাগরিকত্ব আইনে এই ধারা যুক্ত করা হয়। সেই অনুযায়ী, ওই ধারা অনুযায়ী ১৯৬৬-র ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ পর্যন্ত অসমে অনুপ্রবেশ করা বাংলাদেশিদের নাগরিকত্বের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে আসা ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।
এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা দাখিল করে। সেখানে তারা জানায়, ভারতে অবৈধ অভিবাসনের সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে সক্ষম হবে না। কারণ, অভিবাসীরা গোপনে এসেছিল।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ৬-এ সেই সব ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব প্রদান করে যারা ভারতে ১৯৪৯ সালের জুলাই মাসে ভারতে এসেছিলেন। কিন্তু নাগরিকত্বের আবেদন করেননি। এস-৬-এ সেই সব লোকেদের নাগরিকত্ব প্রদান করে ১ জানুয়ারি ১৯৬৬ সালের আগে ভারতে এসেছিলেন। এইভাবে এই ধারায় তাদের নাগরিকত্ব প্রদান করা যায় যারা অনুচ্ছেদ ৬ ও ৭-এর অন্তর্গত নয়।
নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫-এর ধারা ৬-এ-র বৈধতা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন সুপ্রিম কোর্টের ৪ বিচারপতি। সেখানে বিচারপতি জে পারদিওয়ালা ভিন্নমত পোষণ করেন। সিজেআই ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সূর্য কান্ত, এমএম সুন্দরেশ এবং মনোজ মিশ্র বৈধতা বহাল রাখার পক্ষে রায় দেন।
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫-এর ৬-এ ধারাকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ তার শুনানি করে রায় ঘোষণা করেন। আদালত জানায়, অসমে ৪০ লক্ষ এবং পশ্চিমবঙ্গে ৫৬ লক্ষ অভিবাসী রয়েছে। তবে আসামে এর প্রভাব বেশি। তাই আসামকে আলাদা করা বৈধ।