লোকসভা নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। তার কয়েক মাস আগে মহুয়া মৈত্রকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত ঘিরে তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। মহুয়ার বিরুদ্ধে এই 'শাস্তি' নিয়ে তৃণমূলের সুরে বিজেপিকে নিশানা করলেন লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী। সনিয়া গান্ধীকেও পাশে পেয়েছেন মহুয়া। অন্য দিকে, মহুয়াকে ঘিরে পুরনো বিতর্ক উস্কে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন মামলায় শুক্রবার মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে রিপোর্ট পেশ করে এথিক্স কমিটি। পরে সেই রিপোর্টেই সিলমোহর দেন স্পিকার ওম বিড়লা। ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে যায় বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত। এর পরই এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) কালী-বিতর্কের কথা স্মরণ করিয়ে মহুয়াকে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। তিনি লিখেছেন, 'নিজের সীমা বুঝুন। ঈশ্বরকে নিয়ে খারাপ কথা বলবেন না। ঈশ্বরকে ছোট করার ক্ষমতা নেই আপনার। ঈশ্বরের রাগে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেতে পারেন।' বস্তুত, পরিচালক লীনা মানিমেকালাইয়ের ছবি 'কালী'র পোস্টার ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল দেশে। সেই সময় ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভের মঞ্চে তাঁর ভাবনায় কালী কেমন, তা নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন মহুয়া। যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক বেধেছিল। শুক্রবার সেই বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে মহুয়াকে খোঁচা দিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।
মহুয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেছেন যে, মহুয়াকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হোক। পাশাপাশি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে তাঁর বক্তব্য, 'গরিব মানুষরা নিজেদের জমি হারিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্পোরেট বন্ধুদের জন্য।' বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'এটা প্রথমবার ঘটছে না। পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে হয়তো এটা প্রথম। যখন জবাব চাওয়া হয়েছিল, তখন তিনি (মহুয়া) দেননি। পালিয়ে গিয়েছিলেন। কিছু জবাব দেওয়ার থাকলে এথিক্স কমিটিকে দিতেন।' বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'দেশের সুরক্ষা নিয়ে কোনও রাজনীতি করা উচিত নয়। এক সাংসদ যা অন্যায় করেছেন, তার জন্য বাকি সাংসদদের ভাবমূর্তি নষ্ট হোক, সেটা ঠিক নয়।'
অন্য দিকে, মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে 'ইন্ডিয়া'র ভিত শক্ত করার বার্তা দিয়েছেন সনিয়া গান্ধী। মহুয়াকাণ্ডে প্রথম থেকেই তৃণমূলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে কংগ্রেস। সংসদে এই নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে অধীরকেও। শুক্রবার অধীর তৃণমূলের সুরেই বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির তত্ত্ব তুলে ধরেছেন। বলেছেন, 'প্রতিহিংসার মনোভাব নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হয়েছে।' বহিষ্কারের পর শুক্রবার সংসদ ভবন থেকে বেরিয়ে যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মহুয়া, সেই সময় তাঁর পাশে দেখা গিয়েছে সনিয়াকে। পরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে 'ইন্ডিয়া'র নেতারা জমায়েতও করেন।