করোনা সংক্রমণের গ্রাফ যেমন দেশে বাড়ছে তেমনি মানুষের মনে তৈরি হচ্ছে ভয়। আর এই আতঙ্কের পরিবেশের মাঝে উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর এমন এক ছবি সামনে এল, যা মানবতাকে লজ্জা দিচ্ছে। এখানকার গ্রামবাসীরা এক অসহায় প্রবীণ ব্যক্তিকে তাঁর স্ত্রীর শেষকৃত্য করতে দিলেন না, কারণ সেই করোনার আতঙ্ক। ওই প্রবীণব্যক্তি সাইকেলে তার স্ত্রীর দেহ নিয়ে ঘুরে বেড়ালেন, কিন্তু সহায়তা করতে এগিয়ে এল না কেউ।
এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের জৌনপুরে। মাদিহু কোতোয়ালি এলাকার বাসিন্দা তিলকধারী সিংয়ের স্ত্রী রাজকুমারী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। সোমবার তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। রাজকুমারী দেবীকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মারা যান তিনি। অ্যাম্বুলেন্সে করে দেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল।
এরপরে যা ঘটেছিল তা মানবতার পক্ষে চরম লজ্জার। করোনা আতঙ্কের কারণে কোনও গ্রামবাসী তিলকধারী সিংহের বাড়িতে যাননি। সদ্য স্ত্রীহারা বৃদ্ধের কোনও সাহায্য বা সান্ত্বনা কিছুই জোটেনি। এমন পরিস্থিতিতে দেহের পচন ধরতে শুরু করে, এই অবস্থায় একাই বৃদ্ধ তাঁর স্ত্রীর শেষকৃত্য করতে বের হন। গত ২৭ এপ্রিল স্ত্রীর মৃতদেহ সাইকেলের নিয়ে নদীর পাড়ে তাঁর শেষকৃত্যের জন্য পায়ে হেঁটে রওনা দেন বৃদ্ধ।
শেষে পুলিশ শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করে
কিন্তু সেখানে গ্রামবাসীরা পৌঁছে তাঁদের আপত্তির কথা জানায়। ফলে বৃদ্ধার অন্তিম সংস্কার ফের আটকে যায়। শেষ পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যায়। তারাই শেষপর্যন্ত দেহ কফিনে তুলে জৌনপুরের রামঘাটে শেষকৃত্য করেন। আসলে গোটা দেশে করোনা সংকটকে ঘিরে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ভয় এখন কোনও অসুস্থ বা মৃত ব্যক্তির কাছে যাচ্ছেন না কেউ। সাম্প্রতিক সময়ে এরকম অনেক উদাহরণ পাওয়া গেছে, যেখানে কারোনাআক্রান্তের শেষকৃত্যে কেউ উপস্থিত হননি। তখন প্রশাসন বা কোনও অচেনা ব্যক্তিকেই এই দায়িত্ব পালন করতে এগিয়ে আসতে হয়েছে।