উত্তরকাশীর সিল্কারা টানেলে আটকে পড়া ৪১ জনকে বাঁচাতে চলছে উদ্ধার অভিযান। রবিবার থেকে উল্লম্ব খননের কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে অনুভূমিক ড্রিলিংয়ের সময়, অগার মেশিনের একটি অংশ ভেঙে যায়। সেটিও মেরামতের কাজ চলছে। একই সঙ্গে হাতে করে ম্যানুয়াল খনন শুরুর কাজও চলছে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ আতা হাসনাইন জানিয়েছেন, উদ্ধারের জন্য মোট ৬টি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। সবচেয়ে ভাল অপশনের কথাও জানালেন। উদ্ধারকাজ বন্ধ হয়নি এবং এখনও মেশিন মেরামতের কাজ চলছে।
উদ্ধারকারী দল রবিবার টানেলের উপরে উল্লম্ব খনন শুরু করে। প্রথম দিনেই প্রায় ২০ মিটার পর্যন্ত খনন করা হয়। ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের (এন এইচ আইডিসিএল) এমডি মাহমুদ আহমেদ বলেন, কোনও বাধা না থাকলে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই উল্লম্ব খননের কাজ শেষ হবে। খননের পাশাপাশি উদ্ধারের রাস্তা তৈরি করতে ৭০০ মিমি চওড়া পাইপ বসানো হচ্ছে। একটি পাতলা ২০০ মিমি পাইপ অল্প দূরত্বে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আপাতত এটি ৭০ মিটার পর্যন্ত পৌঁছেছে।
এই ৬টি অপশন নিয়ে কাজ করা হচ্ছে
ভার্টিকাল তুরপুন
সৈয়দ আতা হাসনাইন বলেন, রবিবার থেকে শুরু হওয়া উল্লম্ব খননই আপাতত দ্বিতীয় সেরা অপশন। তিনি বলেন, ৮৬ মিটার উল্লম্ব ড্রিলিংয়ের পর টানেলের স্তর ভেঙে ফেলতে হবে। আর তার পরেই আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করে আনা হবে।
সাইড-ওয়ে ড্রিলিং
খাটনি বাঁচাতে পাশাপাশি ড্রিলিংয়ের বিকল্পও বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে, সাইড-ওয়ে ড্রিলিং করার মেশিনগুলি এখনও সাইটে পৌঁছায়নি। গভীর রাতে সম্ভবত সেগুলি পৌঁছে যাবে।
ড্রিফ্ট টেকনিক
হাসনাইন বলেন, যদি অন্য অপশনগুলি কাজ না করলে, তাহলে উদ্ধারের আরও একটি পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। সেটি হল ড্রিফ্ট টেকনিক। এতে পাইপ স্থির করে এক জায়গাতেই রাখতে হবে। অগার মেশিনের ভাঙা অংশগুলি সরাতে হবে। উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ড্রিলিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। ভিতরে আটকা পড়া ৪১ জন কর্মীকে এর জন্য ধৈর্য্য ধরে থাকতে হবে। কারণ ড্রিফ্ট টেকনিকে সময় অনেকটা বেশি লাগতে পারে।
সুড়ঙ্গের বরকোট প্রান্ত থেকে উদ্ধার
এনডিএমএ সদস্য জানান, ব্লাস্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে টানেলের বারকোট প্রান্ত থেকে ৪৮৩ মিটার দীর্ঘ একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করা হবে। হাসনাইন বলেন, রবিবার সকালে পাঁচ নম্বর বিস্ফোরণ করা হয়। ১০-১২ মিটার ভেদ করে এগিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে ২৩ নভেম্বর তিনি বলেছিলেন যে তেহরি হাইড্রো ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন বারকোট-ছোড় থেকে একটি উদ্ধার টানেল নির্মাণ শুরু করেছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন ৩টি করে বিস্ফোরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
বারকোট প্রান্ত থেকে ভার্টিকাল তুরপুন
হাসনাইন বলেন, টানেলের বারকোট প্রান্ত থেকে উল্লম্ব ড্রিলিং-ও করা যেতে পারে। এটি এনজিসি করবে।
হাসনাইন বলেন, বারকোটের দিক থেকে ২৪ ইঞ্চি খনন হবে। এর জন্য ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা প্রয়োজন। সেটি নির্মাণ
করছে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)।
অনুভূমিক তুরপুন
এনডিএমএ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সৈয়দ আতা হাসনাইন জানান, অনুভূমিক ড্রিলিংই এখনও পর্যন্ত সর্বোত্তম অপশন। এর অধীনে ৪৭ মিটার ড্রিলিং সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, অগার মেশিনের ভাঙা অংশ পুনরায় একত্রিত করার কাজ চলছে। তবে অনুভূমিক খননের সময় অনেক বাধা আসছে। আপাতত সেই বাধা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হচ্ছে।