সবকিছু ঠিকঠাক চললে ভারতে AK-203 অ্যাসল্ট রাইফেলের উৎপাদন অতি দ্রুত শুরু হতে চলেছে। ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ইতিমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী আমেঠিতে AK-203 রাইফেল তৈরি হবে। প্রায় সাড়ে ৭ লাখ অত্যাধুনিক এই রাইফেল তৈরি হবে আগামী ১০ বছরে। পরে তা বাহিনীর মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া হবে।
পুতিনের ভারত সফর
রাশিয়ার সঙ্গে এই চুক্তিকে মন্ত্রিসভা সবুজ সংকেত দিয়েছে। আগামী সোমবার অর্থাৎ ৬ ডিসেম্বর ভারত সফরে আসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমন পরিস্থিতিতে ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে চলেছেন তিনি। সেই বৈঠকেই ৭.৫ লক্ষ AK-203 অ্যাসল্ট রাইফেলের চুক্তিও চূড়ান্ত হবে এবং S-400 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের বিষয়টিও ওই বৈঠকে উঠতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরেই AK-203 অ্যাসল্ট রাইফেলের চুক্তির বিষয়ে শোনা যাচ্ছিল।
ভারতীয় সেনার ব্যবহৃত ইনসাস রাইফেলকে বদলে অত্যাধুনিক এই রাইফেল বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে, এমনটাও শোনা গিয়েছিল। তবে পুরোটাই এখন নির্ভর করছে পুতিনের ভারত সফরের উপর। উত্তরপ্রদেশের আমেঠিতে AK-203 রাইফেলের নির্মাণের জন্য কারখানা তৈরি হয়েছে। মোট ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে এই চুক্তিতে। আগামী দশ বছরে সেনাবাহিনী ৬,০১,৪২৭টি AK-203 অ্যাসল্ট রাইফেল পাবে। তবে ৭০ হাজার অ্যাসল্ট রাইফেল রাশিয়া তৈরি করবে, তারপরে প্রযুক্তি হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই রাইফেল?
আমেঠিতে যে কোম্পানিটি এটি তৈরি করবে তার নাম ইন্দো-রাশিয়া রাইফেলস প্রাইভেট লিমিটেড (IRRPL)। মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পের অধীনে এই রাইফেল বানানো হবে। AK-203 অ্যাসল্ট রাইফেলটি ইনসাস রাইফেলের চেয়ে আকারে ছোট, হালকা এবং প্রাণঘাতী। ম্যাগাজিন এবং বেয়নেট ছাড়া ইনসাস রাইফেলের ওজনও ৪.১৫ কেজি। যেখানে, AK-203 এর ওজন ৩.৮ কেজি। ইনসাস রাইফেলের দৈর্ঘ্য ৯৬০ মিমি, যেখানে AK-203 মাত্র ৭০৫ মিমি। কম ওজন এবং কম দৈর্ঘ্যের সঙ্গে বন্দুকটি দীর্ঘ সময়ের জন্য সহজেই বহন করা যায়। এতে ক্লান্তি কমে জওয়ানদের। কম দৈর্ঘ্য ও ওজন হাল্কা হওয়ায় সহজেই ব্যবহার করা যায় এই রাইফেল।
নজরে S-400 মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম
এর পাশাপাশি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভারত S-400 মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমও পেতে চলেছে রাশিয়া থেকে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে রাশিয়া থেকে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে পাঁচটি S-400 রেজিমেন্ট কেনার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ভারত। পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে সেই বিষয়টিও উঠে আসতে পারে বলে খবর। এই মিসাইল সিস্টেম ভারতের হাতে এলে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত আরও উন্নত হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।