'টাকার বদলে প্রশ্ন' বিতর্কে আবারও মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। শুক্রবার তিনি টুইটে লিখেছেন, 'আমি সিবিআই এবং এথিক্স কমিটির (যেটিতে বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য আছে) প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি। যদি তারা আমাকে ফোন করে। আদানি-নির্দেশিত মিডিয়া সার্কাস ট্রায়াল বা বিজেপির ট্রলের উত্তর দেওয়ার জন্য আমার সময় বা আগ্রহ নেই। আমি নদিয়ায় দুর্গাপুজো উপভোগ করছি। শুভ ষষ্ঠী।'
এদিকে, এই ইস্যুতে ধীরে চলো নীতি নিয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, দুর্গাপুজোর পর দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বৈঠক হতে পারে। সূত্রের আরও খবর, দলের তরফে পুরো বিষয়টির ওপরে নজর রাখা হচ্ছে। দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে, দলের নেতারা এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাইছেন না। পার্টি আপাতত ধীরে চলো নীতি নিয়েছে। কারণ বিষয়টি এথিক্স কমিটির সামনে রয়েছে এবং উপযুক্ত সময়ে এই বিষয়ে দলের তরফে কিছু জানানো হবে।
গতকাল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে লোকসভার এথিক্স কমিটির কাছে হলফনামা জমা দিয়েছেন ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানি। তাতে তিনি দাবি করেছেন, মহুয়া মৈত্র তাঁর সংসদ অ্যাকাউন্টের লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড তাঁর সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন। যদিও আজ এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকর ইন্ডিয়া টুডেকে বলেছেন তিনি এখনও তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির চিঠি পাননি। সোনকার আরও বলেছেন যে এথিক্স কমিটি সমস্ত বিষয়টির সত্যতা পরীক্ষা করবে। কারণ এটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুতর বিষয়। আমরা কমিটির কাছে প্রমাণ জমা দিতে বলেছি।
বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটিতে জমা দেওয়া তাঁর হলফনামায় ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানি অভিযোগ করেছেন যে মহুয়া মৈত্র তাঁর সংসদীয় লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড তাঁকে দিয়েছিলেন, যাতে তিনি প্রশ্ন পোস্ট করতে পারেন। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেছেন যে সংসদে প্রশ্ন করার জন্য তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ঘুষ নিয়েছিলেন। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে পাঠানো চিঠিতে দুবে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদরাইয়ের চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে অভিযোগ করেছেন যে মহুয়া এবং হীরানন্দানির মধ্যে ঘুষের বিনিময়ের অকাট্য প্রমাণ রয়েছে। আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদরাই দাবি করেছিলেন যে আদানি গ্রুপ সম্পর্কে বিশেষভাবে প্রশ্ন করার জন্য দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছিলেন মহুয়া।
এর আগে, যদিও হীরানন্দানি গ্রুপ এই অভিযোগগুলি অস্বীকার করেছিল। তারা বলেছিল যে তারা রাজনীতির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয় এবং সর্বদা জনগণের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। মহুয়া অবশ্য ব্যবসায়ীর হলফনামার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাল্টা আঘাত করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে তিনি বলেছেন যে হলফনামাটি সাদা কাগজে এবং অফিসিয়াল লেটারহেডে নয়। এর বিষয়বস্তু একটি তামাশা। তিনি চাঞ্চল্যকরভাবে দাবি করেছেন যে হীরানন্দানিকে হলফনামায় স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) এই হলফনামার খসড়া তৈরি করেছিল। মহুয়া বলেন, ' বিজেপি সরকার আদানি ইস্যুতে আমাকে একরকম চুপ করাতে মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করছে।'