রাজ্যের বকেয়ার দাবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়। বকেয়া ইস্যুতে কেন্দ্র এবং রাজ্যের আধিকারিকরা মিলে যৌথ বৈঠক করবেন। বুধবার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে এ কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, '৯ জন সাংসদকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। রাজ্যের বকেয়া মেটানোর আর্জি জানিয়েছি প্রধানমন্ত্রীকে। প্রধানমমন্ত্রী বলেছেন, কেন্দ্র এবং রাজ্যের আধিকারিকরা যৌথ বৈঠক করবেন।' মমতা এদিন বলেছেন, 'এখনও পর্যন্ত কিছু পাইনি। প্রধানমন্ত্রী মন দিয়ে আমাদের কথা শুনেছেন।'
বুধবার দিল্লিতে নতুন সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সকাল ১১টায় শুরু হয় বৈঠক। মমতার সঙ্গে ছিলেন অভিষেক। বৈঠক শেষে মমতা আরও বলেন, 'আমাদের ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই টাকা দেওয়া উচিত। দ্রুত এই টাকা দেওয়া হোক। আবাস যোজনায় টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মিশনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদি কিছু ভুল হয় যে টাকা বন্ধ করে দেবে, কিন্তু ১৫৫ দল ইতিমধ্যেই বাংলায় গিয়েছেন। যা যা ব্যাখ্যা চেয়েছেন আমাদের অফিসারেরা সব দিয়েছেন। তবুও এখনও কিছু পেলাম না।'
১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্যের বকেয়ার দাবিতে সরব তৃণমূল। গত অক্টোবরের শুরুতে বকেয়ার দাবিতে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে অভিষেক-সহ তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সাক্ষাৎ না করেই বাড়ি চলে যান বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। যা ঘিরে দিল্লিতে কৃষি ভবনে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। অবস্থানে বসে পড়েছিলেন অভিষেক-সহ তৃণমূলের সাংসদ, মন্ত্রীরা। শেষে তাঁদের টেনেহিঁচড়ে বার করে দিল্লি পুলিশ। আটকও করা হয় অভিষেকদের। যা ঘিরে সরগরম হয় রাজনীতির ময়দান। সম্প্রতি লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনেও বকেয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর পরামর্শ ছিল, বকেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করুন মুখ্যমন্ত্রী। শেষমেশ, এ বার বকেয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লি যাওয়ার আগে মমতা বলেছিলেন, '১০০ দিনের কাজে বকেয়া রয়েছে। আমাদের টাকা আটকে রয়েছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলার বাড়ি প্রকল্পের যে ভাগের টাকা, সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের প্রাপ্য টাকা এটা।' লোকসভা নির্বাচনের আগে বকেয়ার দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করা হচ্ছে।