scorecardresearch
 

One Nation One Vote: 'এক দেশ এক ভোট'-এ লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গেই হবে? রইল সব উত্তর

তাই কোনও একক দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় দল বা জোটকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। এরপরও সরকার গঠন না হলে মধ্যবর্তী নির্বাচন হতে পারে। তবে নির্বাচনের পর যে সরকারই গঠিত হোক না কেন, তার মেয়াদ পাঁচ বছর হবে না।

Advertisement
one nation one election one nation one election
হাইলাইটস
  • 'এক দেশ এক ভোট'-এ লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গেই হবে?
  • তাহলে পঞ্চায়েত ও পুরসভা ভোট কীভাবে হবে?
  • রইল সব প্রশ্নের উত্তর

'এক দেশ, এক নির্বাচন'-এর প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এবার এই বিল সংসদে পাশ করাতে হবে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দের নেতৃত্বাধীন কমিটি এই 'ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন'-এর সুপারিশ করেছে। সেই সুপারিশে লোকসভার পাশাপাশি রাজ্য, বিধানসভা এবং পৌরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচন কীভাবে একসঙ্গে পরিচালনা করা যেতে পারে তা নিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার বহুদিন ধরেই 'এক দেশ, এক নির্বাচন'-এর কথা বলে আসছে। এই প্রচেষ্টা সফল করার জন্য গত ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানান। 

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ইশতেহারেও বিজেপি 'এক দেশ, এক নির্বাচন'-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কোবিন্দ কমিটির সুপারিশ করা বিলটি সংসদে পেশ করা হবে। সূত্রের খবর, সংসদের আগামী শীতকালীন অধিবেশনে এই সংক্রান্ত একটি বিল আনতে পারে মোদী সরকার। যদি এই বিলটি আইনে পরিণত হয়, তাহলে ২০২৯ সালে সারা দেশের সমস্ত রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচনও হবে। এই নির্বাচনের পরে, পঞ্চায়েতের পাশাপাশি পৌরসভার নির্বাচনও ১০০ দিনের মধ্যে পরিচালিত হবে। 

আরও পড়ুন

একযোগে নির্বাচনের সুপারিশ আসলে কী? 

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি এই বছরের ১৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। সাড়ে ১৮ হাজার পৃষ্ঠার এই রিপোর্টে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের পাশাপাশি পৌরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত সুপারিশ রয়েছে। কমিটি দুই দফায় একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরামর্শ দিয়েছে। প্রথম দফায় লোকসভার পাশাপাশি সমস্ত রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন করাতে হবে। কমিটি সুপারিশ করে, ২০২৯ সাল থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে। যাতে লোকসভার সঙ্গে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর বিধানসভা নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হতে পারে।

Advertisement

সেই কমিটির সুপারিশে দ্বিতীয় ধাপে পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের নির্বাচন পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ, লোকসভা-বিধানসভা নির্বাচনের ১০০ দিনের মধ্যে ভোট করাতে হবে। সেজন্য সংবিধানে 82A অনুচ্ছেদ যুক্ত করার সুপারিশ করেছে। যদি 82A ধারা যোগ করা হয় তবে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হতে পারে।  সেক্ষেত্রে লোকসভা ও বিধানসভার মেয়াদও একইসঙ্গে শেষ হবে। অর্থাৎ ২০২৭ সালে কোনও রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হলে তার মেয়াদ ২০২৯ সাল পর্যন্ত থাকবে। 

কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সাংবিধানিক সংশোধনী অনুমোদনের জন্য রাজ্যসভাগুলির অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি এই সংশোধনী করতে পারে। 

'এক দেশ এক ভোট'-এ কোনও দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে কী হবে?  

আমাদের দেশে বহুদলীয় ব্যবস্থা। তাই কোনও একক দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় দল বা জোটকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। এরপরও সরকার গঠন না হলে মধ্যবর্তী নির্বাচন হতে পারে। তবে নির্বাচনের পর যে সরকারই গঠিত হোক না কেন, তার মেয়াদ পাঁচ বছর হবে না। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কোনও একক দল বা জোট নিজেরা সরকার গঠন করতে সক্ষম না হলে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর পরে যদি সরকার গঠিত হয় তবে তার মেয়াদ ২০৩৪ সালের জুন পর্যন্ত থাকবে। বিধানসভাতেও একই সূত্র প্রযোজ্য হবে।

একইভাবে, যদি পাঁচ বছরের আগে একটি সরকার পতন হয়, তবে শুধুমাত্র মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তার মেয়াদও ২০২৩৪ সালের জুন পর্যন্ত থাকবে। এক দেশ, এক নির্বাচন-এর নিয়ম যাতে মানা হয় সেজন্য এমনটা করা হয়েছে। 

সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী? সবার আগে সরকারকে সংসদে 'এক দেশ, এক নির্বাচন' এই বিল আনতে হবে। যেহেতু এই বিলগুলো সংবিধান সংশোধন করবে, তাই সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন পেলেই সেগুলো তা হবে। অর্থাৎ লোকসভায় এই বিল পাশ করতে হলে কমপক্ষে ৩৬২ জন সদস্য এবং রাজ্যসভায় ১৬৩ জন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হবে। সংসদ থেকে পাস করার পর, এই বিলের জন্য অন্তত ১৫টি রাজ্যের বিধানসভায় অনুমোদনের প্রয়োজন। এরপর রাষ্ট্রপতির সই হলেই এসব বিল আইনে পরিণত হবে। 

Advertisement