হিন্দু ধর্মে শ্রীমদ্ভগবত গীতার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে শ্রীমদ্ভগবত গীতা হল ভগবান শ্রী কৃষ্ণের মুখ থেকে বের হওয়া প্রতিটি শব্দের লিখিত রূপ। মহাভারতের যুদ্ধের মাঝখানে গীতার জন্ম। ধর্মযুদ্ধের মাঝখানে অর্জুন যখন মোহের বন্ধনে আবদ্ধ। তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে গীতা প্রচার করেছিলেন। তার পরেই তিনি যুদ্ধ করার জন্য সঠিকভাবে চিন্তা করতে সক্ষম হন।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জানতেন যখন কলিযুগ শুরু হবে, তখন মানুষ মোহ, মোহ, লোভ, প্রতারণার জালে এমনভাবে আটকা পড়বে যে, তা থেকে মুক্তি পেতে হলে ঐশ্বরিক জ্ঞানের প্রয়োজন হবে। তবেই সে সব বন্ধন থেকে মুক্ত হবে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এমন একটি জিনিসের কথা বলেছেন যা মানুষকে সব দিক থেকে ধ্বংস করে দেয়। আসুন জেনে নেই কোন কোন জিনিস থেকে একজন মানুষের সবসময় দূরে থাকা উচিত।
ক্রোধদ্ভবতি সম্মোহনঃ সম্মোহনী স্মৃতি।
স্মৃতি ব্রংশদ বুদ্ধিনাশো বুদ্ধিনাশতপ্রণাশ্যতি।
এই শ্লোকের অর্থ হল, আসক্তি ক্রোধ থেকে এবং স্মৃতি বিভ্রান্তি আসক্তি থেকে উদ্ভূত হয়। স্মৃতি বিভ্রান্ত হলে বুদ্ধিমত্তা নষ্ট হয় এবং বুদ্ধিমত্তা নষ্ট হলে সেই ব্যক্তি ধ্বংস হয়।
ভগবান শ্রী কৃষ্ণ শ্রীমদ্ভগবত গীতার এই শ্লোকের মাধ্যমে বলেছেন যে কখনও রাগ করা উচিত নয়। কারণ রাগান্বিত হলে অন্যের প্রতি মানুষের আসক্তি শেষ হয়ে যায়। যখন মানুষের মধ্যে ভালোবাসা শেষ হয়ে যায়, তখন তার সম্পর্কে মনের মধ্যে তৈরি স্মৃতি দুর্বল হতে শুরু করে।
এমতাবস্থায় যখন মানুষের স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে থাকে, তখন সেই ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তা নষ্ট হতে থাকে। যখন মানুষের বুদ্ধি কাজ করে না, তখন সেই ব্যক্তি চিরতরে ধ্বংস হয়ে যায়। রাগের কারণে তার পরিবারের পাশাপাশি সমাজ তাকে বয়কট করে। তাই অকারণে রাগ করা এড়িয়ে চলা উচিত।