গতবারের পর এবছরেও হচ্ছে না বীরভূমের জয়দেব কেন্দুলি মেলা (Joydev Kenduli Mela 2022)। তবে এবছর প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতি মেলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রবিবার করোনা নিয়ে রাজ্য সরকার বিধিনিষেধ জারি করতেই জয়দেব মেলা হবে না বলে জানিয়ে দিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। এদিন জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, করোনা বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। তাই জয়দেব মেলা হবে না।
বীরভূমের ইলামবাজার ব্লকের জয়দেব পঞ্চায়েতে অজয় নদের তীরে কেন্দুলী গ্রাম। সেখানেই জন্মগ্রহন করেন কবি জয়দেব। বারো-তেরো শতকে রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি ছিলেন তিনি। সংস্কৃততে গীত গোবিন্দ তাঁরই রচনা। সেসময় মূলত তাঁর উদ্যোগেই জয়দেব-কেন্দুলি সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসাবে গড়ে ওঠে। বিভিন্ন ধর্মের আলোচনার পাশাপাশি ধর্মপ্রচারের কেন্দ্র হিসাবেও পরিচিতি পেয়েছিল জয়দেব-কেন্দুলি, তৈরি হয়েছিল একাধিক মঠ। পরে বর্ধমানের মহারানি ব্রজকিশোরীর উদ্যোগে ১৬৮৩ সালে জয়দেবে রাধাবিনোদ মন্দির তৈরি হয়। প্রতিবছর পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে বসে জয়দেব মেলা। ভিড় জমান হাজার হাজার বাউল। এছাড়াও জয়দেবে রয়েছে একাধিক মঠ ও আশ্রম, যেখানে থাকেন বাউলরা।
শতাব্দী প্রাচীন এই মেলার অন্যতম বৈশিষ্ঠ হল ধর্ম প্রচার। মেলায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ ভিড় জমান ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে। মেলার বড় অংশ বসে একাধিক আখড়া। বাউল গানের সঙ্গে চলে ধর্মালোচনা। আর সেই গান শুনতে ভিড় জমান দেশ বিদেশের হাজার হাজার মানুষ। বিভিন্ন আখড়ায় বিনামূল্যে ভোগ বিতরণও হয়। কিন্তু করোনার কারনে এবারেও সেই মেলা হচ্ছে না।
প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির (Makar Sankranti 2022) ভোরে জয়দেবে অজয় নদে পুণ্যস্নানও করেন পুণ্যার্থীরা। তার জন্য ঘাটও তৈরি করে প্রশাসন। তবে মেলা না বসলেও, স্নান বন্ধ রাখা হবে কি না সেই বিষয়ে এখনও কিছু জানান হয়নি প্রশাসনের তরফে। এই প্রসঙ্গে জয়দেবের এক বাসিন্দা জানান, সারা বছর তাঁরা মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় মেলায়। এলাকার অর্থনীতিও এই মেলার উপর অনেকটা নির্ভরশীল।