দশমহাবিদ্যার অন্যতম মহাবিদ্যাশক্তি হল আদ্যাশক্তি। সেই আদ্যাশক্তির আরাধনা করেন যাঁরা, তাঁদের কাছে কৌশিকী অমাবস্যার গুরুত্ব অসীম। ভাদ্রমাসের এই তিথিতে তন্ত্রমতে ও শাস্ত্রের রীতি মেনেই কালীপুজো করা হয়ে থাকে। এই অমাবস্যা মেনে চললে জীবনে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যায়। কথিত আছে, কঠিন ও গুপ্ত সাধনার মাধ্যমে কৌশিকী অমাবস্যা পালন করলে সিদ্ধিলাভ ঘটে, আশাতীত সাফল্য লাভ করতে পারেন ভক্তরা। শুধু তাই নয়, এই অমাবস্যার বিশেষ লগ্নে পুজো করলে স্বর্গ ও নরকের দরজা খুলে যায়। তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যায় মায়ের পুজো হয় ধুমধাম করে। তার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
কখন থেকে অমাবস্যার তিথি পড়ছে
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি ও মন্দিরের আদি পুরোহিত তারাময় মুখোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে ১৪ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টে ৩০ মিনিটে অমাবস্যা তিথি লাগছে, পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার ভোর ৬টা ২৯ মিনিট পর্যন্ত অমাবস্যা থাকছে।
কৌশিকী অমাবস্যার মহিমা
পৌরাণিক কাহিনি মতে, শক্তিশালী ও পরাক্রমশালী অসুর শুম্ভ-নিশুম্ভকে হত্যা করতে দেবীর শরীরকোষ থেকে আরও এক দেবী সৃষ্টি হয়। শুরু হয় আদ্যাশক্তি ভগবতীর স্তব। সেই থেকে নাম হয় কৌশিকী। দেবী কৌশিকী সৃষ্টির পর ভগবতী কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন। তারপর থেকে তিনি দেবী কালিকা বা কালী রূপে মর্ত্যে বন্দনা পেয়ে থাকেন। যেহেতু দেহকোষ থেকে এই সৃষ্টি তাই নাম হয় কৌশিকী। কৌশিকী অবতারে রূপ ধারণ করলে কালীর চার হাত, গলায় নরমুণ্ড, দেহে ব্যাঘ্রচর্ম পরিহিত থাকেন। কথিত আছে, এই তিথিতেই সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামাখ্যাপা। তাই এই তিথিতে অশুভ শক্তির বিনাশ হয়ে শুভ শক্তির উদয় হয়। তাই এই অমাবস্যায় পুজো দিলে সব দিক থেকে শুভ হয়।
আর কী মাহাত্ম্য রয়েছে
কথিত আছে,তারাপীঠের উত্তর বাহিনী দ্বারকা নদী গঙ্গার সমান, এই নদীতে স্নান করে মায়ের মন্দিরে পুজো দিলে, মহাযজ্ঞ করে গঙ্গাসাগর মেলা, কুম্ভ মেলার মতো পুণ্যলাভ করা যায়। শতজন্মের পাপ বিনাশ হয়। সাধক-সাধিকাদের কাছে এই দিনটার বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। এইদিন তারাপীঠের মহাশশ্মানে মায়ের সাধনা করলে মায়ের আশীর্বাদ পাওয়া যায়, মায়ের সিদ্ধিলাভ পাওয়া যায়।