কৌশিকী অমাবস্যা এমন এক অমাবস্যা, যে অমাবস্যার জন্য সারাবছর ধরে অপেক্ষা করে থাকেন ভক্তেরা। মাতৃভক্তেরা, কালীভক্তেরা, তারাভক্তেরা। এ বছরও ছবিটা এক। এ বছরও দিনটির জন্য শক্তিসাধক ও ভক্তেরা অপেক্ষা করে আছেন। অবশেষে চলে এল সেই বিরল তিথি, সেই অমোঘ দিন। তন্ত্র মতে, কৌশিকী অমাবস্যার রাতকে 'তারা রাত্রি' বলা হয়। এক বিশেষ মুহূর্তে নাকি স্বর্গ ও নরকের দরজা মুহূর্তের জন্য খোলে এবং বিশ্বাস যে, সাধক নিজের ইচ্ছে মতো শক্তিসাধনার মধ্যে দিয়ে এদিন সিদ্ধিলাভ করতে পারেন।
দিনটির সঙ্গে বীরভূমের তারাপীঠের ঘনিষ্ঠ যোগ। সাধক বামাক্ষ্যাপার অন্যতম সিদ্ধপীঠ এই তারাপীঠ। প্রত্যেক বছর তারাপীঠে দেবীদর্শনের জন্য বহু ভক্ত আসেন। তবে তাঁরা বিশেষ করে আসেন কৌশিক অমাবস্যায়। তারাপীঠের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা তারা। বলা হয়, সব দেবদেবীর ঊর্ধ্বে তিনি। তাই সব দেবীরূপেই পুজো করা হয় মা তারাকে। কখনও তিনি দুর্গা,কখনও লক্ষ্মী,কখনও তিনি সরস্বতী, কখনও কালী!
কৌশিকী অমাবস্যার দিন ও তিথি
এই বছর কৌশিকী অমাবস্যা পালিত হবে ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সোমবার। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুসারে সেদিন ১৬ ভাদ্র। ভোর ৫টা ৫ মিনিট ৫১ সেকেন্ডে শুরু হচ্ছে পবিত্র এই তিথি। অমাবস্যা তিথি থাকবে মঙ্গলবার ভোর ৬টা ২৯ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড পর্যন্ত।
কৌশিকী অমাবস্যার রাতে কী করবেন
শাস্ত্রমতে কৌশিকী অমাবস্যার মাহাত্ম্য অন্য অমাবস্যা তিথির থেকে অনেকটাই আলাদা। তন্ত্রমতে যারা দেবীর সাধনা করেন তাঁদের জন্য এই রাতের বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। জেনে নিন কৌশিকী অমাবস্যার রাতে কোন কোন কাজ করলে সংসার থেকে অশুভ শক্তি দূর হয় এবং মা তারার আশীর্বাদ লাভ করা সম্ভব হয়।
কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ
এই কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে পুজো দিতে ভক্তদের ভিড় দেখার মত হয়। আগেরদিন থেকেই তারাপীঠে চলে আসেন ভক্তেরা। রাতভর পুজো দিয়ে, ভোগ খেয়ে তবেই বাড়ি ফেরেন।
নিরামিষ খাবার খান
জ্যোতিষশাস্ত্র বলছে যে কৌশিকী অমাবস্যায় সংযম পালন করা জরুরি। তাই এদিন উপবাস পালন করতে পারলে খুবই ভালো। পুরোপুরি উপবাস রাখতে না পারলে নিরামিষ আহার করুন। আগামিকাল কৌশিকী অমাবস্যার সন্ধেয় বাড়ির মূল প্রবেশপথের সামনে দরজার দু-পাশে দুটো তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালাবেন। এর ফলে আপনার সংসার থেকে সব অশুভ শক্তি দূর হবে ও শুভ শক্তির আবির্ভাব ঘটবে।