ভগবান শিবের বিষয়ে যতই জানবেন মনে হবে কম জানছেন। তাঁর প্রত্যেক জিনিসের পেছনে কোনও না কোনও রহস্য অবশ্যই থাকে। যদি কোনওদিন লক্ষ্য করে থাকেন তাহলে দেখবেন ভগবান শিবের ৩ সংখ্যার সঙ্গে বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। যেমন তাঁর ত্রিশূলে ৩টে ভাগ থাকে, তাঁর ত্রিনয়ন, কপালে ত্রিপুন্ডও ৩টি রেখা দিয়ে তৈরি। এমনকী ভগবান শিবকে যে বেলপত্র নিবেদন করা হয়, সেটাও তিনটে পাতা সহ হয়। এই ৩ সংখ্যার পেছনে এমন কি রহস্য রয়েছে আজ আমরা সেটা জেনে নেব।
৩ সংখ্যার রহস্য
ভগবান শিবের এই ৩ সংখ্যার রহস্যের বিষয়ে শিব পুরাণে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি সম্পর্কে জানতে হলে, আপনাকে প্রথমে ত্রিপুরা দহের গল্প সম্পর্কে জানতে হবে। এক সময় তিন অসুর তিনটি উড়ন্ত শহর স্থাপন করেছিলেন। এসব শহরের নাম রাখা হয়েছিল ত্রিপুরা। এটি তৈরির পিছনে এই অসুরদের উদ্দেশ্য ছিল অজেয় হওয়া। এই তিনটি শহরের বিশেষত্ব ছিল যে তিনটিই বিভিন্ন দিকে উড়ে বেড়াত। যার কারণে এসব শহরে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। এই তিন রাক্ষস সর্বত্র ত্রাস সৃষ্টি করত এবং এই তিন শহরে লুকিয়ে থাকত। যার কারণে কেউ তাদের ক্ষতি করতে পারেনি। সব দেবতাই তাদের আতঙ্কে খুব বিরক্ত থাকতেন। এই শহরগুলিকে ধ্বংস করার একমাত্র উপায় ছিল একটি তীর দিয়ে তাদের ধ্বংস করা যখন তারা সবাই এক রেখায় থাকবে। সব দেবতারা ভগবান শিবের থেকে সাহায্য চান। তখন ভগবান শিব ধরিত্রীকে রথ বানিয়ে, সূর্য ও চন্দ্রকে রথের চাকা তৈরি করে। এছাড়া মাদার পর্বতে ধনুক বানিয়ে তার ওপরে ওঠে কালের সাপ আদিশেশ। এর পরে ভগবান বিষ্ণু নিজেই তীর হয়েছিলেন এবং প্রতিটি যুগে এই শহরগুলি অনুসরণ করেছিলেন তিনি। সুযোগ পেলেই ভগবান শিব ভগবান বিষ্ণুর রূপে একটি তীর নিক্ষেপ করেন। ভগবান শিবের এই তীর দ্বারা তিনটি শহরই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ভগবান শিব এই নগরের ছাই তাঁর শরীরে লাগান, তখন থেকেই তাঁকে ত্রিপুরী বলা হয়।
ত্রিনেত্র
ভগবান শিবের তিনটি চোখ তপস্যার প্রতিনিধিত্ব করে। উদ্দেশ্য, মন এবং আনন্দ। এর অর্থ পরম সত্য, বিশুদ্ধ চেতনা এবং পরম সুখ।
ত্রিপূণ্ড
ভগবান শিবের ত্রিপুণ্ড বিশ্বের তিনটি লক্ষ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। যার মধ্যে আত্ম-সংরক্ষণ, আত্ম-উন্নতি এবং আত্ম-উপলব্ধি আসে। এটি ব্যক্তির সৃষ্টি, সুরক্ষা এবং বিকাশের প্রতিনিধি।
বেলপত্র
ভগবান শিবের কাছে নিবেদন করা বেলপত্র ৩টি গুণের ইঙ্গিত দেয়। তম, রাজা ও সাধুর গুণাবলী। এটি তিনটি শরীরের প্রতিনিধিত্ব করে।
(এই সকল তথ্য সম্পূর্ণ জ্যোতিষ শাস্ত্রের উপর নির্ভরশীল)