কলিযুগের ন্যায়কর্তা হিসাবে পরিচিত শনিদেব। শনিদেব খারাপ কাজের জন্য খুব কঠোর শাস্তি দিয়ে থাকেন। আর যাঁরা ভালো কাজ করেন, তাঁদের ওপর সর্বদাই কৃপার নজর দিয়ে থাকেন। শনিদেব তেল, তিল ও কালো রং বিশেষভাবে পছন্দ করেন। শনির মন্দিরে এগুলো অর্পণ করতে অবশ্যই দেখেছেন। কিন্তু এইসব জিনিসের থেকেও বড় এক বিষয় লুকিয়ে রয়েছে শনিদেবের মধ্যে। সেরকমই কিছু রহস্যের কথা জেনে রাখুন শনিদেবকে নিয়ে।
শনির বিচারক হওয়ার রহস্য
কথিত আছে যে, সূর্য রাজা, বুধ মন্ত্রী, মঙ্গল সেনাপতি, শনি বিচারক ও রাহু-কেতু প্রশাসকের আসনে রয়েছেন। সমাজে যখন কোনও ব্যক্তি খারাপ কাজ করে থাকেন তথন শনিদেব তাঁকে তাঁর কর্ম অনুযায়ী ফল প্রদান করেন। এরপর রাহু-কেতু তাঁকে দণ্ড দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হন। শনির আদালতে প্রথমে দণ্ড দেওয়া হয়।
শনিদেবের ক্রুর দৃষ্টির রহস্য
শনি মন্দিরে গিয়ে কখনও শনির মূর্তির দিকে সোজা দাঁড়িয়ে পুজো করা উচিত নয়। শনিদেবতার মূর্তিও ঘরে প্রতিষ্ঠা করা যায় না। বলা হয় শনির ক্রুর দৃষ্টি যার ওপর পড়ে, তার বাজে সময় শুরু হয়ে যায়। কিন্তু কেন শনিদেবের মূর্তিকে সবাই এত ভয় পায়? কথিত আছে, শনিদেবের স্ত্রী দারুণ তেজস্বী ছিলেন। এক রাতে শনি-পত্নী পুত্রলাভের আশায় শনির কাছে যান। সেই সময় শনিদেব ভগবান বিষ্ণুর ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। শনি-পত্নী অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যান। এরপর তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে শনিদেবকে অভিশাপ দেন। শনিদেবের পত্নী বলেন যে শনিদেব যাকেই দেখবে সে বিনাশ হয়ে যাবে। তাই শনিদেবের চোখের দিকে না তাকানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন জ্যোতিষীরা।
শনিদেবের রং কালো কেন
শনিদেব সূর্যদেবের পুত্র। শনিদেবের জন্ম ছায়া ও সূর্যের মিলনের ফলে হয়েছিল। জ্যোতিষ মতে, গর্ভে থাকার সময় শনিদেব সূর্যের তেজ সহ্য করতে পারেনি আর তার রং কালো হয়ে যায়। শনিদেবের রং কালো দেখে সূর্য তাকে নিজের পুত্র স্বীকার করতে চান না। শনি এই বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে সূর্যদেবের সঙ্গে শত্রুতা করে নেয়।
আপনি যদি শনির ক্রোধ এড়াতে চান তবে এমন লোকদের থেকে দূরে থাকুন যারা অন্যের খারাপ করে এবং ষড়যন্ত্র করে। অন্যের প্রতি খারাপ চিন্তা মাথায় রাখবেন না। কারো ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না। কারো অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। অসতর্ক হওয়া এড়িয়ে চলুন। সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। সূর্যাস্তের সময় ঘুমোবেন না।