মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেবেন। দাবি করলেন তৃণমূলের সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা প্রতাপ নায়েক। তিনি জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মীদের পক্ষে। তিনি কোনওদিন বলেননি যে, দেবেন না। রাজ্যের এই অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেও তিনি ডিএ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে দলের সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন। সরকারি কর্মীদের অনেকে আশা করেছিলেন হয়তো তাঁদের নিয়ে কথা বলবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্র সরকার ডিএ বাড়িয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীও হয়তো কোনও ঘোষণা করতে পারেন। তবে বাস্তবে তা হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রীর এই সভায় সরকারি কর্মীদের নিয়ে কথা না বলা প্রসঙ্গে সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা প্রতাপ নায়েক বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী কোনওদিন বলেননি ডিএ দেবেন না। তিনি ডিএ দেবেন। এমনিতেই তিনি সরকারি কর্মীদের পক্ষে একাধিক কাজ করেছেন। তিনি সরকারি কর্মী দরদী মানুষ। ছুটি থেকে শুরু করে মাসের পয়লা তারিখে বেতন দেওয়া, সব ব্যবস্থা করেছেন। তবে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা এখনও কেন্দ্রীয় সরকার দেয়নি। তাই তিনি ডিএ দিতে পারছেন না। সেটা পেলেই মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয় ডিএ দিয়ে দেবেন নিশ্চয়। সরকারি কর্মীদের স্বার্থে প্রয়োজনে বৈঠকে বসবেন।'
এমনিতেই বকেয়া ডিএ-র মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। কনফেডারেশন অফ স্টেট গর্ভমেন্ট এমপ্লয়িজ, সরকারি কর্মচারী পরিষদ ও ইউনিটি ফোরাম মামলা লড়ছে। শহিদ মিনারে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তবে সেই সব সংগঠনের প্রতি প্রতাপ নায়েকের পরামর্শ, 'আপনারা এসব না করে কেন্দ্র সরকারের কাছে ধরনা দিন। সেখান থেকে বকেয়া টাকা নিয়ে আসুন। তাহলেই ডিএ পেয়ে যাবেন।'
এদিকে প্রতাপ নায়েকের এই বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারী সংগঠন সরকারি কর্মচারি পরিষদ। সেই সংগঠনের ওয়ার্কিং কমিটির প্রেসিডেন্ট সঞ্জীব পাল বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁর সরকার ক্ষমতায় এলেই বকেয়া ভাতা মিটিয়ে দেবেন। সেই সময় বামেরা ক্ষমতায় ছিল। বামেদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, যারা সরকারি কর্মীদের ডিএ দিতে পারে না তাদের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। তাহলে আজ মুখ্যমন্ত্রী কেন ডিএ দিচ্ছেন না?'
অন্যদিকে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'যাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা ইত্যাদির কথা বলছেন, তাদের উদ্দেশে বলব, রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা কেন ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হবেন। ১ তারিখে বেতন সব রাজ্য দেয়। আমাদের রাজ্যের থেকে ছোটো রাজ্যও ডিএ দেয় সময় মতো। অথচ এই সরকার তা দিতে পারে না। কারণ, সরকারি কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করা এই সরকারের অভিধানে নেই। আর যে সব সংগঠন মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে সওয়াল করছে তারা আসলে সরকারের স্বার্থ রক্ষাকারী। এদের সঙ্গে সাধারণ সরকারি কর্মীদের কোনও সম্পর্ক নেই।'