Egg Price Hike: মে মাসের শুরু থেকেই বাড়তে শুরু করেছে মুরগির ডিমের দাম। বিগত দিন দশেকে প্রতি জোড়া ডিমের দাম ১ টাকা ১০ পয়সা থেকে দেড় টাকা বেড়ে গিয়েছে। সোমবার, ২২ মে, ২০২৩ তারিখের ন্যাশনাল এগ কোঅর্ডিনেশন কমিটির (NECC) প্রস্তাবিত হার অনুযায়ী, দেশের বাকি শহরগুলির তুলনায় কলকাতায় ডিমের দর সবচেয়ে বেশি। কলকাতা সহ বাংলার বিভিন্ন জেলার বাজারে পুনে-মুম্বইয়ের চেয়েও বেশি দামে বিকোচ্ছে পোল্ট্রির মুরগির ডিম।
ন্যাশনাল এগ কোঅর্ডিনেশন কমিটির (NECC) প্রস্তাবিত হার অনুযায়ী, সোমবার সবচেয়ে সস্তায় ডিম পাওয়া যাচ্ছে দিল্লিতে। এই শহরে আজ ১০০টি ডিমের পাইকারি দর ৪৭৫ টাকা। অর্থাৎ, দেশের রাজধানী শহরে একেকটি ডিমের পাইকারি দর আজ ৪ টাকা ৭৫ পয়সা আর এক জোড়ার দাম পড়ছে সাড়ে ৯ টাকা। দিল্লির পরেই সবচেয়ে সস্তায় ডিম পাওয়া যাচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরীতে। এখানে প্রতি পিস ডিমের দর ৪ টাকা ৮৫ পয়সা। অর্থাৎ, এক জোড়া ডিমের পাইকারি দর এখানে ৯ টাকা ৭০ পয়সা। এর পরই কর্নাটকের বেল্লারী জেলার হোসপেট শহরে ৪ টাকা ৮৭ পয়সা দরে বিকোচ্ছে একেকটা ডিম। অর্থাৎ, এখানে এক জোড়া ডিমের পাইকারি দর ৯ টাকা ৭৪ পয়সা।
আরও পড়ুন: দাম কমল চিকেনের, বাড়ল ডিমের, কত চলছে?
ন্যাশনাল এগ কোঅর্ডিনেশন কমিটির (NECC) প্রস্তাবিত হার অনুযায়ী, সোমবার মুম্বই আর পুনেতে ১০০টি ডিমের পাইকারি দর ৫২৫ টাকা। অর্থাৎ, দেশের এই দুই শহরে আজ এক জোড়া ডিমের পাইকারি দর সাড়ে ১০ টাকা। যেখানে, কলকাতায় আজ ১০০টি ডিমের পাইকারি দর ৫৬০ টাকা। অর্থাৎ, এই শহরে আজ এক জোড়া ডিমের পাইকারি দর ১১ টাকা ২০ পয়সা।
দিল্লি-মুম্বই-পুনের চেয়েও কলকাতা সহ বাংলার বিভিন্ন জেলায় ডিমের দাম এতটা বেশি কেন?
এর উত্তরে ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের (WEST BENGAL POULTRY FEDERATION) সাধারণ সম্পাদক মদন মোহন মাইতি বলেন যে, “অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলায় মুরগি প্রতিপালনের খরচ অনেক বেশি। কারণ, মুরগির খাবারের ৭০ শতাংশ কাঁচামালই অন্য রাজ্য থেকে আমদানি করতে হয়। আর জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে পাখির খাবার আমদানির খরচ গত কয়েক বছরে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এখন এ রাজ্যে এক পিস ডিমের উৎপাদন খরচ ৫ টাকা। ৫ টাকা ৬০ পয়সার কমে দাম ধরলে খামার মালিকরা ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতে পারবেন না।”
এ রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ মুরগির মাংস আর ডিমের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তা সত্ত্বেও কেন এখনও এ রাজ্যে মুরগি প্রতিপালনের সঠিক পরিকাঠামো তৈরি হল না? কেন এখনও পাখির ৭০ শতাংশ খাবার অন্য রাজ্য থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে?
এই প্রশ্নের উত্তরে ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “গত ৭-৮ বছরে পাখি প্রতিপালনের ক্ষেত্রে অন্য রাজ্যের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের নির্ভরশীলতা অনেকটাই কমেছে। এখন পাখির খাবার হিসাবে ভুট্টা সহ অন্যান্য দানা শস্যর চাষ অনেকটাই বেড়েছে। রাজ্যের কৃষি উন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যেই বাংলার খামার মালিকরা ভিন রাজ্য থেকে পাখির খাবারের আমদানী আরও অনেকটা কমিয়ে ফেলতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তখন অন্যান্য রাজ্যের চুলনায় বাংলায় উৎপাদিত ডিম বা মাংসের দামের ব্যবধানও অনেকটাই কমে যাবে।”